নরসিংদীতে শিশু অশ্রুর চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন পুলিশ কর্মকর্তা
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও সাংবাদিকদের তথ্যে পাওয়া পলাশে অসুস্থ শিশু অশ্রুর চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহেদ আহমেদ। এরই ধারাবাহিকতায় অশ্রুকে তার বাবা-মায়ের সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকার জাতীয় অর্থপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) পাঠানো হয়েছে।
অসহায় দিনমজুর বাবার পাশে দাঁড়িয়ে পুলিশ কর্মকতার সহযোগিতাকে মানবিকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বলে নরসিংদীর সর্বস্তরের মানুষকে ব্যাপকভাবে অনুপ্রাণিত করেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নরসিংদীর পলাশ উপজেলার সমবায় আদর্শ বিদ্যানিকেন স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী অশ্রু (৭) খেলতে গিয়ে দুর্ঘটনায় পড়ে। এতে তার ডান পাশের পা থেকে কোমড়ের হাড় সরে যায়। দিনমজুর বাবার পক্ষে মেয়ের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। ফলে সাত দিন যাবত শিশু অশ্রু বিনা চিকিৎসায় প্রচণ্ড ব্যথা নিয়ে ঘরে পড়ে চিৎকার করছিল। সন্তানের অসহ্য ব্যথা আর কষ্ট সইতে না পেরে অশ্রুর বাবা সঞ্জয় দাস সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করেন। পরে এক সাংবাদিক ঘটনাটি উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অসহায় বাবার আর্তনাদ ও মেয়ের চিকিৎসার খরচ জোগাতে সমাজের বিত্তবান মানুষের সাহায্য কামনা করেন।
এ নিয়ে গত ৬ জুন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ‘মানবিক সহযোগিতার আবেদন’ শিরোনামে একটি পোস্ট দেওয়া হলে বিষয়টি নজরে আসে নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শাহেদ আহমেদের। পরে তিনি শনিবার সন্ধ্যায় শিশু অশ্রুর শারীরিক অবস্থার খোঁজ-খবর নিতে তার বাড়িতে যান। তিনি অশ্রুর চিকিৎসার সব দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
অশ্রুর বাবা পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল পৌরসভার নতুন বাজার এলাকায় ভাড়া বাসায় দুই সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করেন। পেশায় তিনি একজন দিনমজুর।
এ ব্যাপারে নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শাহেদ আহমেদ বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শিশু অশ্রুর জন্য মানবিক আবেদনের পোস্টটি দেখতে পাই। পরে স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছ থেকে বিস্তারিত জেনে শিশুটিকে দেখতে যাই এবং মানবিকতার টানে তার চিকিৎসার সব দায়-দায়িত্বভার গ্রহণ করি। আমি সৃষ্টিকর্তার কাছে শিশু অশ্রুর মঙ্গল কামনা করি। সে যেনো দ্রুত সুস্থ হয়ে স্কুলে যাওয়ার পাশাপাশি তার শৈশব উপভোগ করতে পারে এটাই প্রত্যাশা করি।’