গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চেকপোস্ট ও যৌথবাহিনীর কম্বাইন্ড পেট্রোলিং চলবে : প্রেস সচিব

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, রাজধানীসহ সারা দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে চেকপোস্ট ও যৌথবাহিনীর কম্বাইন্ড পেট্রোলিং চলবে। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে মোটরসাইকেল দেওয়া হচ্ছে।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কোর কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রেস সচিব এ কথা বলেন।
শফিকুল আলম বলেন, ‘‘বিভিন্ন জায়গায় চেকপোস্ট করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মনিটরিং করা হবে। একইসঙ্গে ইন্টেলিজেন্স গেদারিং আরও স্টেপআপ করা, সেটার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমাদের যারা ইন্টেলিজেন্স উইং, এজেন্সি আছে তারা তাদের মতো করে গেদারিং বাড়াবে। আমরা সে অনুযায়ী অ্যাকশনে যাব।”
প্রেস সচিব আরও বলেন, ‘‘আজকের মিটিংটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সেখানে অনেকগুলো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রথম সিদ্ধান্তটা হচ্ছে যে পুরো ঢাকা শহরসহ যেসব জায়গায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হয়েছে, সেসব জায়গায় আমরা পেট্রোল বাড়াব। এই পেট্রোলিংটা আজকে সন্ধ্যা থেকে পুরো ঢাকা শহরে দেখতে পারবেন। এর জন্য যেটা করা হচ্ছে কম্বাইন্ড পেট্রোল করা হবে। কম্বাইন্ড হচ্ছে পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিজিবি, নেভি এরা সবাই একসঙ্গে কম্বাইন্ড পেট্রোল করবে। অনেকগুলো জায়গায় চেকপোস্ট বসানো হবে।”
শফিকুল আলম বলেন, ‘‘সর্বশেষ যেটা হয়েছে ঢাকা খুবই যানজটপূর্ণ সিটি সেজন্য কোথাও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কোনো কিছু ঘটলে সেখানে যেতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যেতে দেরি হয়। এজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোকে প্রচুর মোটরসাইকেল দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। খুব দ্রুত মোটরসাইকেলগুলো কেনা হবে যাতে দুইজন দ্রুত মোটরসাইকেলে করে ঘটনাস্থলে যেতে পারে। আপাতত পুলিশের জন্য ১০০ নেওয়া হচ্ছে। পরে আরও ১০০ নেওয়া হবে। অন্যান্য বাহিনীর যারা আইনশৃঙ্খলার কাজে নিয়োজিত তাদের জন্যও আরও কিছু (৫০টি করে) নেওয়া হবে।”
এক প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, ‘‘আজ গত কিছুদিনের পুরো পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়েছে। আজকের সভায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সবাই ছিলেন। এখানে পুলিশ, র্যাব, সেনাবাহিনী, বিজিবি, নেভি, কোস্টগার্ড ও বিভিন্ন ইন্টিলিজেন্ট এজেন্সি ছিলেন। সবাই মিলে অনেকগুলো সিদ্ধান্ত এসেছে, আমি শুধু মেজরগুলো বললাম।”
এই পেট্রোলিংটা কী শুধু ঢাকা সিটির জন্য নাকি সারা দেশে পরিচালনা করা হবে এমন প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, ঢাকা আমাদের সবার আগে, এরপর সারা দেশে আপনারা এটা দেখবেন। আজ সন্ধ্যা থেকে আগে শুরু করি, তারপর আপনারা দেখতে পাবেন। আগে শুরু হোক।
নির্দিষ্ট কোনো স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে প্রেস সচিব বলেন, এ বিষয়টা নিয়ে ইন্টেলিজেন্স গেদারিং হচ্ছে, আপনারা দেখতে পাবেন।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সরকার কোনো উদ্বিগ্ন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, সরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি গুরুত্ব সহকারে নিচ্ছে বলেই আজকের মিটিংটা হয়েছে। আজকে এখানে সবাই ছিলেন, যারা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে কাজ করেন তাদের সবার প্রতিনিধি ছিল। প্রতিটি সংস্থার যারা চিফ তারা প্রত্যেকেই এসেছেন। একটা হাইলেভেলের সভা হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলো থেকে কোনো অসহযোগিতা দেখেছেন কি না জানতে চাইলে শফিকুল আলম বলেন, আমরা এরকম কিছু দেখছি না। আমরা চাই বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যত দ্রুত সম্ভব উন্নত করা। কারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তার দায়িত্ব হচ্ছে সরকারের। আমরা এই কাজটা সুচারুরূপে করতে চাই।
হঠাৎ করে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এমন হলো কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, হঠাৎ করে.. আমরা বলছি তো আমরা ইন্টেলিজেন্ট গেদার করছি। আজকে তাদের প্রতিনিধিও ছিল তারা আরো ডিটেলে রিপোর্ট দেবেন। আমরা গুরুত্ব সহকারে এগুলো মনিটরিং করছি। আমরা আশা করছি আপনারা দৃশ্যমান উন্নতি খুব দ্রুত দেখতে পাবেন।
প্রেস সচিব আরও বলেন, এখন থেকে প্রতিটি দপ্তরে ই-ফাইলিং সিস্টেম চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কোন টেবিলে ফাইল কতদিন আটকে আছে তা অনলাইনে জানা যাবে। সরকারের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ নিতে পারবে, এতে করে দুর্নীতি কমে আসবে।