নিম্নস্তরের সিগারেটের দাম বৃদ্ধির দাবিতে বিড়ি শ্রমিকদের মানববন্ধন
বিড়ি শিল্প রক্ষায় বাজেটে নিম্নস্তরের সিগারেটের দাম বৃদ্ধিসহ চার দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে পাবনা জেলা বিড়ি মজদুর ইউনিয়ন। পাবনার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বাজেটে নিম্নস্তরের সিগারেটের দাম বৃদ্ধি, বিড়ির ওপর অর্পিত অগ্রিম ১০ শতাংশ আয়কর প্রত্যাহার, বিড়ি শিল্পে নিয়োজিত শ্রমিকদের সুরক্ষা আইন প্রণয়ন এবং সরেজমিনে পরিদর্শন ব্যতিরেকে বিড়ি কারখানার লাইসেন্স প্রদান বন্ধ করার দাবি জানান বিড়ি শ্রমিকেরা। পরে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
পাবনা জেলা বিড়ি মজদুর ইউনিয়নের সভাপতি হারিক হোসেনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, সহ-সভাপতি নাজিম উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল গফুর, প্রচার সম্পাদক শামীম ইসলাম, কার্যকরী সদস্য আনোয়ার হোসেন, সদস্য লুৎফর রহমান প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘বিড়ির মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হলো নিম্নস্তরের সিগারেট। বর্তমানে নিম্নস্তরের সিগারেট বাজারের ৭৫ শতাংশ দখল করে আছে। এসব নিম্নস্তরের সিগারেটের বেশিরভাগই বিদেশি কোম্পানির। প্রস্তাবিত ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে নিম্নস্তরের ১০ শলাকা সিগারেটে মূল্যস্তর ৩৯ টাকা থেকে ৪০ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে, যা খুবই সামান্য। এ ছাড়া সিগারেটে কোনো সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধি করা হয়নি। ফলে বিড়ির বাজার দখলকারী সিগারেট কোম্পানিগুলো একচেটিয়া ব্যবসার সুযোগ পাচ্ছে। এ বছর বাজেটে যদি নিম্নস্তরের সিগারেটের মূল্য ও সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধি করা না হয়, তবে দেশীয় বিড়ি শিল্পের অস্তিত্ব চিরতরে বিলীন হয়ে যাবে। নিম্নস্তরের সিগারেটের ভোক্তা বেশি থাকা সত্ত্বেও শুল্কারোধ বৃদ্ধি না করলে সরকার বিপুল রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হবে।’
বক্তারা আরও বলেন, ‘বিড়ি শতভাগ দেশীয় প্রযুক্তি নির্ভর শিল্প। অন্যদিকে, সিগারেটের সবকিছু বিদেশ থেকে আমদানি করা এবং প্রযুক্তি নির্ভর। বিদেশি বহুজাতিক কোম্পানি এদেশের মানুষের ফুসফুস পুড়িয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করছে। সিগারেটে অগ্রীম আয়কর ৩ শতাংশ হলেও বিড়িতে অগ্রিম আয়কর ১০ শতাংশ। এ বৈষম্যমূলক অগ্রিম আয়কর প্রত্যাহার করতে হবে। একই সঙ্গে সরেজমিনে পরিদর্শন ব্যতিরেকে অস্তিত্বহীন বিড়ি কারখানার লাইসেন্স প্রদান বন্ধ করতে হবে। দেশের বহু হতদরিদ্র, স্বামী পরিত্যক্তা, নদীভাঙন কবলিত জনগণ ও শারীরিক বিকলাঙ্গসহ সুবিধাবঞ্চিত শ্রমিকদের অন্নসংস্থানের একমাত্র মাধ্যম এই বিড়ি শিল্পে নিয়োজিত শ্রমিকদের সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করে এ শিল্পকে রক্ষা করতে হবে। না হলে আমরা কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হব।’