নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিলে আ. লীগের ওপর মানুষের ঘৃণা কমবে : গয়েশ্বর
পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিলে আওয়ামী লীগের ওপর দেশের মানুষের ঘৃণা ও ক্ষোভ কমবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে জিয়া নাগরিক ফেরামের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় আওয়ামী লীগের উদ্দেশে বলেন, ‘দেশের বাইরে আপনাদের পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। দেশেই যদি থাকতে হবে, সরকারে বা বিরোধী দলে যেখানে থাকেন, শান্তিতে থাকতে পারবেন, এমন উদ্যোগ গ্রহণ করুন।’
বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন। এতে আপনাদের ওপর দেশের মানুষের যত ক্ষোভ আছে, যতটা ঘৃণা আছে, তা কমে যেতে পারে।’
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘অনেকদিন ধরে উপলব্ধি করেছি, ঘরে বসে আলোচনা করে সমস্যার ফয়সালা হবে না।’
গয়েশ্বর বলেন, ‘করোনাকে সরকার রাজনৈতিক ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। এর অর্থ এই নয় যে, সরকারের দেওয়া বিধিনিষেধ দীর্ঘকাল মানতে আমরা বাধ্য। আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি বা বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে সরকারের ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে কর্মসূচি হয়েছে। বিএনপির শক্তি সরকার পরিমাপ করতে পেরেছে। এ কারণেই সরকার করোনা নামক বিধিনিষেধের অস্ত্রটি ব্যবহার করেছে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের জরিপেও ৮৮ শতাংশ মানুষ বলছে, রাজনৈতিক কারণে বাংলাদেশে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।’
মার্কিন নিষেধাজ্ঞার দিকে ইঙ্গিত করে গয়েশ্বর বলেন, বিদেশিরা কাকে অপছন্দ করছে বা করছে না, তা বোঝা যাচ্ছে না। কিন্তু যাঁদের নাম তালিকায় ছিল না, তাঁরাও ঝাঁকে ঝাঁকে ফেরত আসছেন। বিদেশিরা যাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, তাঁদের সরকার পুরস্কার দিচ্ছে।’
গয়েশ্বর আরও বলেন, ‘সুনির্দিষ্টভাবে যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, সরকার যদি তাঁদের বিচারের আওতায় আনত, তাহলে বিশ্ববাসীর রুষ্টতা কিছুটা লাঘব হতে পারত। কিন্তু তাঁরা চ্যালেঞ্জ করেছে।’
প্রস্তাবিত নির্বাচন কমিশন আইন প্রসঙ্গে সরকারের উদ্দেশে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এর আগে বিনা কাবিনে সংসার করেছেন, এখন কাবিন করে সংসার করবেন। যত দিন বিনা কাবিনে সংসার করলেন, সেই অপকর্মের বিচার হবে না?’
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘এই সরকারের জাতীয় সংসদে যাঁরা আছেন, তাঁদের দেশের মানুষ ভোট চোর বলে। চোর তো চোরই। চোরদের যাঁরা সাহসী ভাবে তারা কাপুরুষ। আশা করি, আমরা কাপুরুষের ভূমিকায় অবতীর্ণ হব না। জিয়াউর রহমান সম্মুখভাগে যুদ্ধ করে যেমন দেশ স্বাধীন করেছেন, তেমনি সব বাধা মোকাবিলা করে জনগণের অধিকার আমরা প্রতিষ্ঠা করবই।’
সংগঠনের সভাপতি মিয়া মোহা. আনোয়ারের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এ কে এম জামানের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন বিএনপিনেতা হাবিবুর রহমান হাবিব, আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ।