পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জজকে বদলি, আউয়াল দম্পতির জামিন : আইনমন্ত্রী
দুর্নীতির মামলায় জামিন আবেদনের শুনানির সময় আইনজীবীদের সঙ্গে অশালীন ও রূঢ় আচরণ করায় পিরোজপুর জেলা ও দায়রা জজ মো. আবদুল মান্নানকে স্ট্যান্ড রিলিজ (তাৎক্ষণিক বদলি) করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
‘একইভাবে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ও প্রশমিত করতেই পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য এ কে এম এ আউয়াল ও তাঁর স্ত্রী লায়লা পারভীনকে জামিন দেওয়া হয়েছে। এতে আইনের কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি’, যোগ করেন আইনমন্ত্রী।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় পিরোজপুরের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম এ আউয়াল ও তাঁর স্ত্রী লায়লা পারভীনের জামিন আবেদন খারিজ করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন জেলা ও দায়রা জজ মো. আবদুল মান্নানের আদালত।
জামিন আবেদন নাকচের আদেশের পর পরই আদালত কক্ষে হট্টগোল শুরু হয় এবং আদালত প্রাঙ্গণ ও শহরে আউয়াল-সমর্থকরা বিক্ষোভ করে। পরে অজ্ঞাত কারণে জেলা জজ মো. আবদুল মান্নানকে স্ট্যান্ডরিলিজ (তাৎক্ষণিক বদলি) করা হয়।
পরে ভারপ্রাপ্ত জেলা জজ হিসেবে দায়িত্ব পান যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালত নাহিদ নাসরিন। তাঁর আদালতে আউয়াল দম্পতির আগের করা জামিন আবেদন পুনর্বিবেচনার আবেদন করলে বিকেল সাড়ে ৩টায় শুনানির পর আদালত তাঁদের দুই মাসের জামিন দেন।
এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। এর মধ্যেই আজ সকালে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন। তিনি নয়াপল্টনের দলীয় কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা যে কথাটি সব সময় বলছি যে সরকার বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করে। আউয়াল-লায়লা পারভীনের এ ঘটনা তা আবারও প্রমাণ করল। এ ঘটনায় বিচার বিভাগ যে স্বাধীন নয়, সেটা আরেকবার উলঙ্গভাবে প্রমাণিত হলো।’
এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতেই আজ বুধবার বিকেলে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে এক তাৎক্ষণিক সংবাদ সম্মেলনে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন। এ সময় তিনি পিরোজপুরের আদালতে ঘটে যাওয়া গতকালকের ঘটনারও বর্ণনা দেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও তাঁর স্ত্রী দুদকের একটি মামলায় জামিন চাইতে পিরোজপুর জেলা জজ আদালতে গিয়েছিলেন। গতকালের এ ঘটনায় আমি যতটুকু জানতে পেরেছি, ওই সময় তাঁর পক্ষের আইনজীবীদের সঙ্গে বিচারক অশালীন ও রূঢ় ব্যবহার করেছেন। এই অবস্থায় বারের সব আইনজীবী আদালত বর্জন করার সিদ্ধান্ত নেন।’
উদ্ভূত পরিস্থিতির সময় লোকজন রাস্তায় বেরিয়ে গিয়েছিল, সেটাকে কন্ট্রোল (নিয়ন্ত্রণ) করতেই আইন মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে ওই বিচারককে ওখান থেকে স্ট্যান্ড রিলিজ করার আদেশ দেওয়া হয় বলে জানান আনিসুল হক।