প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর ভেঙে জমি দখলের চেষ্টা, যুবলীগনেতাসহ প্রেপ্তার ৪
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলায় ভূমিহীনদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের ঘর ভেঙে সরকারি জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগ ওঠেছে। এ ঘটনায় যুবলীগের নেতাসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের একটি ঘরসহ চারটি বসতঘর ভাঙচুর করা হয়েছে বলে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন। এতে আহত হয়েছে কমপক্ষে আটজন। পরে ৯৯৯-এ কল দিলে পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার মালখানগর ইউনিয়নের কাজীরভাগ গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মালখানগর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আহসানুল ইসলাম আমিন, মিথুন খান, সামু ও ফিরোজ খান।
এ সময় হামলায় আহত হয়েছেন হেলেনা বেগম (৩৫), রিনা বেগম (৪৫), মাসুদা বেগম (৫০), বীথি বেগমসহ (২৭) আটজন।
এ ব্যাপারে সিরাজদিখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘৯৯৯-এ কল পেয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. জিয়া গিয়ে চারজনকে আটক করেন। পরে তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।’
সিরাজদিখান উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মঈনুল হাসান নাহিদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘যুবলীগনেতা আহসানুল ইসলাম আমিনের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
স্থানীয়রা জানায়, কাজীরভাগ গ্রামে পাকিস্তান আমল থেকে সরকারি জমি লিজ নিয়ে বসবাস করে আসছে মৃত আলমগীর শেখের পরিবার। সেই জমি নিয়ে পাশের মৃত মোশারফ খানের পরিবারের সঙ্গে বিরোধ চলে আসছিল। বিরোধপূর্ণ জমি নিয়ে একাধিক মামলা হয়, তার সবগুলোতে রায় পায় ভুক্তভোগী মৃত আলমগীর শেখের পরিবার।
মামলায় হেরে গতকাল বৃহস্পতিবার মোশাররফ মুন্সীর ছেলে মিথুন খান ও তাঁর মেয়ের জামাই ফয়সাল মাঝি ও ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আহসানুল ইসলাম আমিন দলবল নিয়ে বিরোধপূর্ণ জমি দখলের জন্য হামলা চালায়। এ সময় মৃত আলমগীর শেখ ও তাঁর বড় ভাই হিরণ শেখের বিধবা মেয়ে হেলেনা বেগমকে দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরসহ চারটি ঘর ভাঙচুর করা হয়। এ সময় বাধা দিতে গেলে মেরে আহত করে আটজনকে।
হামলার শিকার মৃত আলমগীরের প্রতিবন্ধী ছেলে রজ্জব শেখ বলেন, ‘আমরা সরকারি জমি লিজ নিয়ে বাপ-দাদার আমল থেকে বসবাস করে আসছি। কিন্তু হঠাৎ করে ২০১৪ সাল থেকে পাশের মোশাররফ খানের চোখ পড়ে জমিটিতে। পরে তারা দখলের চেষ্টাও করে একাধিকবার।’
‘এক মাস আগে মোশাররফ খান মারা গেলে তাঁর ছেলে ও মেয়ের জামাই জমিটি দখলের নেওয়ার জন্য উন্মাদ হয়ে উঠে। তারই ধারাবাহিকতায় গতকাল বৃহস্পতিবার হামলা চালিয়ে বসতঘরে ভাঙচুর চালায় এবং মারধর করে আমাদের। পরে ৯৯৯-এ কল দিলে পুলিশ এসে আমাদের উদ্ধার করে’, যোগ করেন রজ্জব শেখ।