ফলোআপ : মিটফোর্ডে চিকিৎসক-নার্সসহ ২১ জন আক্রান্ত
রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালের সার্জারি ও গাইনি বিভাগের আরো পাঁচ চিকিৎসকসহ নয়জন করোনাভাইরাসে অক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে এ হাসপাতসলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২১ জনে দাঁড়িয়েছে।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কাজী মো. রশিদ উন নবী এনটিভি অনলাইনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কাজী মো. রশিদ উন নবী বলেন, ‘নতুন করে আক্রান্ত পাঁচজনের মধ্যে দুজন সার্জারি বিভাগের, একজন মেডিসিন বিভাগের, দুজন গাইনি বিভাগের চিকিৎসক রয়েছেন। এ ছাড়া তিনজন নার্স ও একজন হাসপাতালের স্টাফ রয়েছেন।’
গতকাল পরিচালক জানিয়েছিলেন, হাসপাতালটির মোট ১২ জন করোনায় আক্রান্ত। আজ আরো নয়জন আক্রান্ত হওয়ায় এখন সংখ্যাটি দাঁড়িয়েছে ২১ জনে।
মিডর্ফোড হাসপাতালের পরিচালক আরো বলেন, ‘আমরা আক্রান্ত সবাইকে আইসোলেশেন রাখার ব্যবস্থা করেছি। এ ছাড়া সংস্পর্শে আসা আরো ৬৯ জনের নমুনা সংগ্রহ করেছি। এদের মধ্যে যাদের বাসায় বাচ্চা আছে তাদেরকে প্রতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। আর যারা নিশ্চিত করেছেন, নিজেরা বাসায় কোয়ারেন্টিন করতে পারবেন তাদের বাসায় রাখা হয়েছে।’
হাসপাতালের চিকিৎসাসেবায় কোনো পরিবর্তন আনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কাজী মো. রশিদ উন নবী বলেন, ‘আমরা রোগীদের চিকিৎসা করতে চাই। তারা যেন সত্যিটা আমাদের জানায়। তাহলে আমরা সঠিক সেবা দিতে পারব। আর সবাইকে সর্তক করা হয়েছে। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন। আশা করি, আমরা এ যুদ্ধে জয়ী হব।’
গতকাল বৃহস্পতিবার এনটিভি অনলাইনে, ‘রোগী করলেন তথ্য গোপন, আক্রান্ত হলেন মিটফোর্ডের ১১ চিকিৎসক-নার্স’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।
সেখানে হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার মিতুল চক্রবর্তী এনটিভি অনলাইনকে বলেছিলেন, গত শনিবার মিটফোর্ড হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে তথ্য গোপন করে একজন রোগী ভর্তি হন। নারায়ণগঞ্জ থেকে আসলেও রোগী এবং তাঁর তিন স্বজন জানায়, তাঁরা মাদারীপুর থেকে এসেছেন। রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ওইদিনই জরুরিভাবে অপারেশন করা হয়। তবে পরে রোগীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, তিনি নারায়ণগঞ্জ থেকে এসেছেন।
সন্দেহ হলে পরের দিন রোগীর টেস্ট করে করোনা পজিটিভ পাওয়া যায়। পরে তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ১১ জনকে কোয়ারেন্টিনে পাঠিয়ে টেস্ট করা হয়। তাদেরও করোনা পজিটিভ এসেছে।
তথ্য গোপন না করলে এমন ঘটনা ঘটার আশঙ্কা কম থাকতো জানিয়ে সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক মিতুল চক্রবর্তী আরো বলেন, ‘আমরা সঠিক তথ্য জানলে সার্জারির সময়, করোনাভাইরাসের সুরক্ষা সরঞ্জাম নিয়েই অপারেশনে যেতাম। শুধু তাই নয়, আমরা সবাই ওইদিন আরো অপারেশনে অংশ নিয়েছি। এমনকি ওইদিন ও পরের দিন রোববারও রোগী দেখেছি।’
‘আমাদেরও পরিবার আছে। আর প্রতিদিনের মতো বাসায় গিয়েও সেনিটাইজড হয়েছি। যদি জানতাম এই রোগী করোনা পজেটিভ তাহলে অন্তত কোয়ারেন্টিনে থাকতে পারতাম। কিন্তু রোগীর তথ্য গোপনের কারণে আরো কতজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে তা জানি না’, যোগ করেন মিতুল চক্রবর্তী।