বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিদের শনাক্তে জনগণের সহায়তা চান পররাষ্ট্রমন্ত্রী
আদালতের রায় কার্যকর করতে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিষয়ে তথ্য দেওয়ার জন্য দেশের জনগণ, বিশেষ করে বিদেশে বসবাসকারী বাংলদেশিদের অনুরোধ জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।
আজ শনিবার এক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আপনার কাছে যদি তাদের (খুনি) সম্পর্কে কোনো তথ্য থাকে তবে আমাদের জানান।’
‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পলাতক খুনিদের মধ্যে তিনজনের সন্ধান এখনো জানা যায়নি,’ যোগ করেন মন্ত্রী।
তবে ওই তিন খুনির অবস্থান সম্পর্কে জানার জন্য সরকার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে বলে জানিয়েছেন ড. মোমেন। তিনি বলেন, ‘আমরা খুনিদের মধ্যে দুটি বিষয়ে কিছুটা অগ্রগতি করেছি। আমরা এখনো পুরোপুরি (সফল) বলতে পারিনি। আমরা সব ফ্রন্টে আমাদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আদালতের রায় কার্যকর করতে বাংলাদেশে পাঁচজন খুনিকে ফিরিয়ে আনতে সরকার বদ্ধপরিকর। এটি আমাদের আশা এবং প্রত্যাশা। খুনিদের একজন সাবেক অধিনায়ক আবদুল মাজেদকে সম্প্রতি ফাঁসি দেওয়া হয়েছে।’
এ ছাড়া বঙ্গবন্ধুর আরো পাঁচ হত্যাকারী- সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশীদ খান, বজলুল হুদা, এ কে এম মহিউদ্দিন আহমেদ ও মুহিউদ্দিন আহমেদের ফাঁসি ২০১০ সালের জানুয়ারিতে কার্যকর করা হয়। আরেক খুনি আজিজ পাশা ২০০১ সালে জিম্বাবুয়েতে মারা যান।
পলাতক অপর খুনিরা হলেন- সাবেক লেফটেন্যান্ট কর্নেল খন্দকার আবদুর রশীদ, এস এইচ এম বি নূর চৌধুরী, শরিফুল হক ডালিম, রাশেদ চৌধুরী ও মোসলে উদ্দিন খান।
বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের হত্যার কারণে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক ১২ সেনা কর্মকর্তার ফাঁসির রায় ২০০৯ সালের ১৯ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ বহাল রাখে।
পলাতকদের মধ্যে সরকার নূর চৌধুরী ও রাশেদ চৌধুরীর অবস্থান জানলেও অন্যান্য পলাতক- রশিদ, ডালিম এবং মোসলেহ উদ্দিন সম্পর্কে নিশ্চিত কোনো তথ্য নেই।
নূর চৌধুরী এখন কানাডায় এবং রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। ডালিম এবং মোসলেমউদ্দিন যথাক্রমে স্পেন এবং জার্মানে আত্মগোপন করে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তার পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে. আব্দুল মোমেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বঙ্গবন্ধু কর্নারে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান।
পাশাপাশি, ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় পতাকাও উত্তোলন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এ ছাড়া ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের মৃত্যুবরণকারী সব সদস্যের আত্মার মাগফিরাত কামনা ও দেশবাসীর মঙ্গল কামনা করে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মসজিদে।
এ সময় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম ও পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন উপস্থিত ছিলেন।