বরিশালে ভোটকেন্দ্রে ইউএনওর সঙ্গে সিটি মেয়রের বাগবিতণ্ডা
বরিশালে জেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট দিতে কক্ষে প্রবেশের সময় বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর সঙ্গে কেন্দ্রে দায়িত্বরত বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামানের বাগবিতণ্ডা হয়েছে। এসময় মো. মনিরুজ্জমানের ওপর ক্ষোভ ঝাড়েন মেয়র সাদিক। তাঁকে ‘স্টুপিড’ বলেন তিনি। আজ সোমবার সকাল সোয়া ৯টার দিকে বরিশাল জিলা স্কুল কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।
মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর ফেসবুক পেজে করা লাইভে দেখা যায়, সকাল ৯টার দিকে জেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট দিতে বরিশাল জিলা স্কুল কেন্দ্রে যান মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ। এ সময় তাঁর সঙ্গে বিনাপ্রতিদ্বন্দিতায় বরিশাল জেলা পরিষদের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর হোসাইন, বরিশাল সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান রিন্টু, সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র গাজী নইমুল হোসেন লিটু, রফিকুল ইসলাম খোকন, ২১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ সাইয়েদ আহম্মেদ মান্না ও পাঁচ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কেফায়েত হোসেন রনিসহ বেশ কয়েকজন জনপ্রতিনিধি ছিলেন।
এক নম্বর ভোট কক্ষে প্রবেশের সময় বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহকে দল বেঁধে ভোট কক্ষে প্রবেশ না করতে অনুরোধ করেন। এ সময় ইউএনওর সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়ান মেয়র।
মেয়র সাদিক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমি কি ঢুকছি এখানে? আমি কি ঢুকছি? কেন সিনক্রিয়েট করতেছেন? আপনি কে? আমি কি ঢুকছি? তারপরও আপনি কথা বলতেছেন। আমি কি বাচ্চা শিশু? স্টুপিডের মত কথা বলেন। যেভাবে ভাবটা করেন তাতে বোঝায় দল বাইধা ঢুকতেছি। ভোটার হইছে ১৭৪ জন। তাহলে সমস্যা কোথায় আপনাদের? ’
তখন কাউন্সিলর শেখ সাইয়েদ আহম্মেদ মান্না পাশ থেকে বলেন, ‘এখানে সবাই ভোটার, আপনি চেনেন না। আপনে বরিশালে মনে হয় নতুন।’
এ কে এম জাহাঙ্গীর ইউএনওকে বলেন, ‘উনি বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র, আমি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং উনি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান।’
এসময় ইউএনও বলেন, ‘চেয়ারম্যান মহোদয় আমি আপনাদের চিনি। আমি এমন কিছু বলিনি।’
মেয়র সাদিক ইউএনওকে বলেন, ‘আমি তো ভেতরে ঢুকিনি। আসার পর থেকে আপনারা বলতেছেন। ফাইজলামি করেন আপনারা। আপনে কানে কথা শুনেননি।’
ইউএনও মনিরুজ্জমান মেয়রকে বলেন, ‘আপনাকে কিছু বলিনি স্যার।’
এরপর মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ ইউএনও মনিরুজ্জামানের সঙ্গে বাগবিতন্ডায় জড়ান। পরে ইউএনও মনিরুজ্জমানকে নিবৃত্ত করেন সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান রিন্টু ও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেলা পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর হোসাইন।
বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ‘মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর সঙ্গে আমার বাগবিতণ্ডার খবর সঠিক নয়।’
বরিশালের জ্যেষ্ঠ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও জেলা পরিষদ নির্বাচনে সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তা নুরুল আলম বলেন, ‘ভোট কক্ষে ফেসবুক লাইভ করার কোনো বিধান নেই।’
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১৮ আগস্ট রাতে ব্যানার অপসারণকে কেন্দ্র করে সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনিবুর রহমানের সঙ্গে বিরোধে জড়ান মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ। এসময় গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটে। এতে পাল্টাপাল্টি তিনটি মামলা হয়।