বাংলাদেশ জাতিসংঘের এফএও কাউন্সিলের সদস্য মনোনীত
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) কাউন্সিলের সদস্য মনোনীত হয়েছে বাংলাদেশ। এশিয়া অঞ্চল থেকে দুই বছরের (২০২২-২০২৪) জন্য কাউন্সিল সদস্য মনোনীত হয়েছে বাংলাদেশ। এ ছাড়া এফএওর ক্রেডেনশিয়াল কমিটিরও সদস্য মনোনীত হয়েছে বাংলাদেশ। এফএওর চলমান ৪২তম কনফারেন্সে এ সিদ্ধান্ত হয়।
কৃষিমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল ও রোমে বাংলাদেশ দূতাবাসের যৌথ প্রচেষ্টায় এ সম্মান অর্জন সম্ভব হয়েছে এবং এতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আস্থার প্রতিফলন ঘটেছে।
গত সোমবার (১৪ জুন) শুরু হওয়া এই কনফারেন্স কোভিড-১৯-এর কারণে ভার্চুয়ালি হচ্ছে। আজ শুক্রবার (১৮ জুন) এটি শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। কৃষিমন্ত্রীর নেতৃত্বে আট সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল সম্মেলনে অংশ নিচ্ছে। ঢাকা থেকে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব মো. রুহুল আমিন তালুকদার, যুগ্ম সচিব তাজকেরা খাতুন, উপসচিব আলী আকবর ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের উপসচিব বিধান বড়াল অংশ নিচ্ছেন। ইতালির রোম থেকে অংশ নিচ্ছেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শামীম আহসান ও ইকনোমিক কাউন্সিলের মানস মিত্র।
সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন গত মঙ্গলবার দুপুরের অধিবেশনে ঢাকা থেকে ভার্চুয়ালি কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক ‘স্টেট অব ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচারে’ (এসওএফএ) বাংলাদশের অবস্থান তুলে ধরেন। একইদিন সন্ধ্যার অধিবেশনে তিনি এশিয়া অ্যান্ড প্যাসিফিক অঞ্চলের (এপিআরসি) ৪৬টি সদস্য দেশের পক্ষ থেকে যৌথ বিবৃতি দেন।
‘স্টেট অব ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার’ অংশের ভাষণে বাংলাদেশ খাদ্য ও কৃষিতে অত্যন্ত শক্ত অবস্থানে রয়েছে বলে উল্লেখ করেন কৃষিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টির উন্নয়নে অভাবনীয় অগ্রগতি অর্জন করেছে। ২০ বছর আগে ১৯৯৯-২০০০ সালে এ সরকারের আগের আমলে দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে ও বর্তমান সরকার এ আমলেও তা ধরে রেখেছে। মাথাপিছু আয় ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে এবং দারিদ্র্য কমছে। ফলে খাদ্যে মানুষের প্রবেশযোগ্যতা সহজতর হয়েছে। এ ছাড়া, বিগত দশকে অপুষ্টি দুই-তৃতীয়াংশ কমেছে।’
কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘চলমান কোভিড-১৯-এর শুরুতেই খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি, সরবরাহ অব্যাহত রাখা ও দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্রুততার সঙ্গে পদক্ষেপ নেন। অধিক ফসল উৎপাদনের জন্য প্রতি ইঞ্চি জমি চাষের আওতায় আনতে নানামুখী প্রণোদনা প্রদান করেন। এছাড়া, কৃষিখাতে করোনার প্রভাব মোকাবিলায় ৫ হাজার কোটি টাকার বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেন। ফলে কোভিড পরিস্থিতি সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শিতা ও নির্দেশনায় দেশে কৃষির উৎপাদন ও খাদ্য সরবরাহের ধারা অব্যাহত থাকে এবং খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়।’
কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে মানবসৃষ্ট দুর্যোগ ১১ লাখ রোহিঙ্গাও বাংলাদেশের সমাজ ব্যবস্থা, অর্থনীতি ও পরিবেশে বিরূপ প্রভাব ফেলছে।’
এ ছাড়া এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের পানি স্বল্পতা ও পানি সমস্যা নিরসনের জন্য আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়ানোর আহ্বান জানান মন্ত্রী। পানির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও বণ্টনের জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের সম্মিলিত সংগঠন বা প্ল্যাটফর্ম গঠনেরও প্রস্তাব করেন তিনি।