বিএনপির উচিত আমাদের নেত্রীকে ধন্যবাদ দেওয়া : তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘খালেদা জিয়ার তো হাসপাতালে নয়, কারাগারে ঈদ উদযাপন করার কথা ছিল। কারণ, তিনি তো দণ্ডপ্রাপ্ত আসামী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মহানুভবতা দেখিয়ে কারাগার থেকে মুক্তি দিয়েছেন শাস্তি স্থগিত রেখে। এজন্য বিএনপির উচিত আমাদের নেত্রীকে ধন্যবাদ দেওয়া।’
আজ শনিবার সকালে নিজ বাসভবনে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের ড. হাছান মাহমুদ এ কথা বলেন।
শুক্রবার ঈদের দিন জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, একদিকে ভয়াবহ করোনা, অন্যদিকে ফ্যাসিবাদী সরকারের অত্যাচার-নির্যাতনের কারণে ঈদ পালিত হচ্ছে অত্যন্ত কষ্টের মধ্যে, দুঃসময়ের মধ্যে।
এ বিষয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, পবিত্র ঈদের দিনও বিএনপি এবং বিএনপির মহাসচিব হীন রাজনৈতিক বক্তব্য থেকে বেরিয়ে আসতে পারেননি। পবিত্র ঈদের দিনও তিনি বিষোদগারের রাজনীতিটা অব্যাহত রেখেছেন। অন্তত ঈদের দিনে বিষোদগারের, দোষারোপের রাজনীতি থেকে বিরত থাকা উচিত ছিল। তাও করেছেন আবার জিয়াউর রহমানের তথাকথিত কবরে গিয়ে। ঈদের দিনে তাঁরা জিয়াউর রহমানের কবরে যান। নিজের আত্মীয়স্বজন, মুরব্বিদের কবরে যান কি না, জানি না। সেখানেই বক্তব্য দিয়েছেন, বিষোদগারের রাজনীতিটা করেছেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, প্রকৃতপক্ষে সরকারের সঠিক নীতির কারণে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ও নেপালের দিকে তাকিয়ে দেখুন, সেখানকার তুলনায় বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি অনেকটাই ভালো। এমনকি পাকিস্তানের চেয়ে ভালো।
‘জীবন ও জীবিকার সঠিক সমন্বয় করে সরকার যে নীতি নিয়েছে, তাতে করোনাও নিয়ন্ত্রণে আছে, মানুষের মধ্যে হাহাকারও নেই। প্রত্যেকের মোবাইল ফোনে সরকারি প্রণোদনার অর্থ চলে যাচ্ছে। কেউ আশা করেনি, দাবিও করেনি। এমনকী বিএনপি বা অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকেও মোবাইল ফোনে টাকা পাঠানোর দাবি ছিল না। এখানে অন্য কিছু হওয়ার সুযোগই নেই। মির্জা ফখরুল সাহেবরা এসব বুঝেও না বোঝার ভান করেন। কারণ, তাঁদের দোষারোপের রাজনীতিটা তো করতে হবে।’
মির্জা ফখরুলের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘তিনি বলেছেন, ১২ বছর ধরে তাঁদের ঈদ নেই। তাঁরা আসলে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছেন। কারণ, খালেদা জিয়ার যে মিথ্যা জন্মদিন এত পালন করেছেন, তা তো ফাঁস হয়ে গেছে করোনা টেস্টের রিপোর্টে। এজন্য তাঁরা হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছেন। গত বারো বছরে বাংলাদেশের মানুষ যে আনন্দ-উল্লাসে ঈদ পালন করেছে তা অভাবনীয়।’
ড. হাছান মাহমুদ আরও বলেন, ‘গতকাল মহামারি করোনার মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো ঈদুল ফিতর উদযাপন করতে হয়েছে। আশা করি আগামীবার আমরা মুক্ত পরিবেশে ঈদ উদযাপন করতে পারব।’
‘করোনার মধ্যেও মানুষ চেষ্টা করেছে ঈদের আনন্দকে ভাগাভাগি করে নিতে। মার্কেট-দোকানগুলোতে উপচে পড়া ভিড় ছিল। মানুষ কেনাকাটা করেছে। অর্থাৎ এই মহামারির মধ্যেও মানুষ চেষ্টা করেছে ঈদের আনন্দকে উপভোগ করতে। তবে, করোনার কারণে ঈদের যে স্বাভাবিক আনন্দ, সেটি মানুষ করতে পারেনি।’
সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানার আহ্বান জানিয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের সরকার চেষ্টা করেছে মানুষ যাতে স্ব স্ব স্থানে থেকে ঈদ উদযাপন করে। এরপরও বিপুল মানুষ বাড়িতে গেছে। এবং অনেকে স্বাস্থ্যবিধি মানেননি। ফিরে আসার সময়ও স্বাস্থ্যবিধি না মানে তাহলে এর একটি বিরূপ প্রভাব থাকবে। জনগণের কাছে আমার অনুরোধ ঈদে বাড়ি যাওয়ার জন্য যে হুড়োহুড়ি আমরা করেছি, সেটি যেন ফিরে আসার সময় না করি। কারণ, নিজের, নিজের পরিবার ও সর্বোপরি দেশের সুরক্ষার জন্য এটি অত্যন্ত প্রয়োজন।