বিদ্যালয়ের সভাপতি নির্বাচন নিয়ে ২ অভিভাবককে ছাত্রলীগের মারধর
মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে ঝিটকা আনন্দমোহন উচ্চ বিদ্যালয়ে সভাপতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে দুজন অভিভাবক সদস্যকে মারধর করা হয়। এসময় পুলিশ ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উপস্থিত ছিলেন বলে দাবি করা হয়েছে। পরে ভোট স্থগিত ঘোষণা করেন প্রিজাইডিং অফিসার।
জানা গেছে, গত ১৮ জুলাই ঝিটকা আনন্দমোহন উচ্চ বিদ্যালয়ে অভিভাবক সদস্য পদের ভোটে চারজন নির্বাচিত হন। আজ রোববার ছিল সভাপতি পদে নির্বাচন। এই নির্বাচনে সভাপতি পদে প্রার্থী ছিলেন হরিরামপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক দেওয়ান সাইদুর রহমান ও সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম।
গত কয়েকদিন ধরেই সভাপতি পদে নির্বাচনকে ঘিরে দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। আজ দুপুর একটার পর পর দুই পক্ষের লোকজন বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে জড়ো হতে থাকে। পুলিশ দুপক্ষের লোকজনকে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে সরিয়ে দিতে গেলে পুলিশের সঙ্গে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বাগবিতণ্ডা হয়।
পরে বেলা ৩টার দিকে নয়জন সদস্যের মধ্যে সাতজনের উপস্থিতিতে উপজেলা শিক্ষা অফিসের সুপারভাইজার নির্বাচনের প্রিজাইডিং অফিসার কামরুল ইসলাম ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচনের জন্য সভা শুরু করেন। এ সময় অভিভাবক সদস্য মহিউদ্দিন মঞ্জু ও মিজানুর রহমান সভাকক্ষে আসতে গেলে জেলা ও উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মারধর করেন। পরে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে।
বেলা সাড়ে তিনটার দিকে হরিরামপুর উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা তাপসী রাবেয়া বিদ্যালয়ে এসে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীসহ বহিরাগতদের বাইরে বের করে দেন। এরপর প্রিজাইডিং অফিসার সভা শুরু করলেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেন।
পরে সিংগাইর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রিয়াজুল হক ও র্যাবের সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এরপর দুপক্ষের সমর্থকদেরও বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে বাইরে সরিয়ে দেওয়া হয়।
হরিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান সাইদুর রহমান বলেন, ‘নির্বাচনের দিন ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের উপস্থিতিতে দুজন অভিভাবক সদস্যকে মারধরের ঘটনা ঘটে। নির্বাচনের পরিবেশ না থাকায় প্রিজাইডিং অফিসার নির্বাচন স্থগিত করেছেন।’
এদিকে সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম জানান, স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও নবনির্বাচিত সদস্যরা তাঁকে প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব দেন। কিন্তু তিনি নিজে ওই বিদ্যালয়ে সভাপতি পদে প্রার্থীতা ঘোষণা করেননি। চারজন অভিভাবক সদস্যসহ ৯ জন ভোটার গণতান্ত্রিকভাবে যাকে সমর্থন করবেন, তিনিই সভাপতি হবেন।’