নিজের তৈরি প্লেনে চড়ে আকাশে উড়লেন শিবালয়ের জুলহাস

ইচ্ছাশক্তি এবং চেষ্টা থাকলে অনেক কঠিন বিষয়ও সম্ভবপর হয়ে ওঠে। তেমনি চেষ্টা ও পরিশ্রমে ‘প্লেন’ তৈরি করেছেন মানিকগঞ্জের এক তরুণ। শুধু তৈরিই নয়, মঙ্গলবার (৪ মার্চ) নিজেই সেটি সফলভাবে আকাশে উড়িয়েছেন। এই তরুণের নাম জুলহাস মোল্লা (২৮)। তার বাড়ি মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার তেওতা ইউনিয়নের ষাইটঘর তেওতা গ্রামে।
শৈশব থেকেই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রতি ঝোঁক ছিল জুলহাসের। ২০১৪ সালে স্থানীয় বিকেএস উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করার পরও উদ্ভাবনী চিন্তা তাকে তাড়িয়ে বেড়াত। তবে ২০২১ সালে যখন প্রথমবারের মতো আরসি (রিমোট কন্ট্রোল) প্লেন দেখেন, তখনই ঠিক করেন- নিজের একটা প্লেন বানাবেন।
এরপর শুরু হয় নিরলস গবেষণা। ইউটিউব ও বই ঘেঁটে ধাপে-ধাপে শিখতে থাকেন প্লেন তৈরির খুঁটিনাটি। যন্ত্রাংশ জোগাড় করা থেকে শুরু করে নকশা তৈরি, কাঠামো সাজানো সবকিছু করেছেন নিজেই। দীর্ঘ সময়ের প্রচেষ্টার পর অবশেষে সফলতা এলো। সম্প্রতি নিজের হাতে তৈরি সেই প্লেনে চড়ে আকাশে ওড়েন তিনি।
জুলহাসের এই সাফল্য প্রমাণ করে- স্বপ্ন দেখার সাহস আর অধ্যবসায় থাকলে কিছুই অসম্ভব নয়। সরকার বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি তাকে সহায়তা করে, তবে হয়তো ভবিষ্যতে বাংলাদেশের আকাশে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি প্লেন দেখা যাবে! তার এই সাফল্যে বিস্মিত স্থানীয়রা।

এই বিষয়ে জুলহাসের সাথে কথা হলে তিনি জানান, নিরাপত্তার বিষয়টি আমি আগেই বলেছি। এই প্লেনটি অনেক গবেষণা করে আকাশে উড়িয়েছি, যেটা প্রথমে পাঁচ থেকে ছয় ফিট ওপরে ওঠে। পরে ২৫ থেকে ৫০ ফিট পর্যন্ত ওপরে উড়াতে সক্ষম হয়েছি। আরো ওপরে ওঠা সম্ভব। তবে ৫০ ফিটের ওপরে আমি আর যাইনি।
জুলহাস আরও বলেন, আমাকে নিয়ে অনেকেই উপহাস করেছে। আমার পরিবার আমাকে সাপোর্ট করেছে বলে আজকের এই দিনটি দেখতে পারছি। সরকার যদি আমাকে সহযোগিতা করে তাহলে আমার এই প্রকল্প নিয়ে আমি সামনের দিকে অগ্রসর হতে পারবো
শিবালয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাকির হোসেন বলেন, আমি এটাকে যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে দেখছি। জুলহাসের উদ্যোগকে স্বাগতম জানিয়ে জেলা প্রশাসক ইতোমধ্যেই খোঁজখবর নিয়েছেন। তার এই প্রকল্পটিকে যদি বাণিজ্যিকভাবে রপ্তানি করা যায় বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে যাবে। আমরা জুলহাসকে উপজেলা প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করবো।