বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ শনিবার সকাল ৭টা ১ মিনিটে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে রাজধানীর মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী।
স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী। এ সময় বিউগলে করুণ সুর বাজানো হয়। শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে গার্ড অব অনার দেয় তিন বাহিনীর একটি চৌকস দল।
এরপর আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে শহীদ সমাধিতে ফুল দিয়ে আরেকটি পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শহীদ স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর উপস্থিত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ পরিবারের সন্তানদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের পর শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
এরপর শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ পরিবারের সন্তান এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ এলাকা ছেড়ে গেলে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এ সময় শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে মানুষের ঢল নামে।
পরে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাজধানীর ধানমণ্ডিতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন তাঁর মেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি সম্মান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী সেখানে কিছুসময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। পরে আওয়ামী লীগের প্রধান হিসেবে দলীর কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে আরেকটি পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন শেখ হাসিনা।
পরাজয় নিশ্চিত জেনে ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর রাতে বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করতে প্রখ্যাত শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, শিল্পী, লেখক, সাংবাদিকসহ দুই শতাধিক মেধাবী বাঙালিকে হত্যা করে পাকিস্তানি বাহিনী।
মেধাবী বাঙালিদের বাড়ি থেকে চোখ বেঁধে অজ্ঞাত স্থানে ধরে নিয়ে নৃশংসভাবে নির্যাতন ও হত্যা করা হয়। পরে তাদের মরদেহ রাজধানীর রায়েরবাজার ও মিরপুরসহ বিভিন্ন বধ্যভূমিতে ফেলে দেওয়া হয়।
পাকিস্তানি বাহিনী তাদের এ দেশীয় দোসর রাজাকার, আল বদর ও আল শামস বাহিনীর সদস্যদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় ঠাণ্ডা মাথায় এ গণহত্যা চালায়। তাদের উদ্দেশ্য ছিল স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ যাতে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে।
জাতির মেধাবী সন্তানদের লাশ পরে মিরপুর ও রায়েরবাজারসহ অন্যান্য স্থানে পাওয়া যায়।
শহীদ বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে ছিলেন অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী, ড. ডালিম চৌধুরী, অধ্যাপক মুনিরুজ্জামান, ড. ফজলে রাব্বি, সাংবাদিক সিরাজুদ্দিন হোসেন, শহীদুল্লাহ কায়সার, অধ্যাপক জিসি দেব, জেসি গুহ ঠাকুর্তা, অধ্যাপক সান্তোষ ভট্টাচার্য, মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, সাংবাদিক খন্দকার আবু তালেব, নিজামুদ্দিন আহমেদ, এসএ মান্নান, এএনএম গোলাম মুস্তফা, সৈয়দ নাজমুল হক ও সাংবাদিক সেলিনা পারভিন।
এরপর থেকে দিনটি শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে পালন করা হয়।