ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সংঘর্ষের ঘটনায় মোট ১৮ মামলা, গ্রেপ্তার ২১
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সংঘর্ষের ঘটনায় এ পর্যন্ত ১৮টি মামলা করা হয়েছে। এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে প্রায় ২০ হাজার জনকে। এর মধ্যে এজহারনামীয় আসামি ১০৭ জন। তবে তাঁদের নাম জানা যায়নি। আর, পুলিশ এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করেছে ২১ জনকে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় সদর থানায় ১৫টি, আশুগঞ্জ থানায় দুটি এবং সরাইল থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। এসব মামলার আসামিদের মধ্যে সদর থানার পুলিশ ১৮ জনকে এবং আশুগঞ্জ থানার পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
গত শুক্রবার থেকে রোববার পর্যন্ত হেফাজতের সমর্থকদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ১২ জন নিহত হয়।
এদিকে, আজ বৃহস্পতিবার পুলিশের মহাপরিদশর্ক ব্রাহ্মণবাড়িয়া আসছেন। তিনি বিভিন্ন স্থানে হামলা ও ভাঙচুরের স্থানগুলো পরিদর্শন করবেন।
এর আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় গত মঙ্গলবার ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পিবিআইয়ের একটি দল মঙ্গলবার সকালে ক্ষতিগ্রস্ত পৌরসভা, সুর সম্রাট দি আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেন। এ সময় তারা বিভিন্ন দপ্তরের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেন এবং ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের চেষ্টা করেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পিবিআইয়ের পরিদর্শক কামরুল হাসান জানান, প্রতিটি ঘটনাস্থলে পিবিআইয়ের বেশ কয়েকটি টিম কাজ করছে। ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মরত লোকজনসহ আশপাশের লোকজনের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।
এর আগে গত সোমবার সকালে ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেন পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. আনোয়ার হোসেন।
ডিআইজি ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশন, সুর সম্রাট দি আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব, ভূমি অফিস, পৌরসভাসহ বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনা পরিদর্শন করেন এবং সার্বিক বিষয়ে খোঁজখবর নেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘এখানকার প্রতিটি ঘটনার জন্যই মামলা হবে। রোববার এখানে বিভিন্ন জায়গায় যে ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ হয়েছে, সেগুলো পরিদর্শন করছি, দেখছি। এটা একেবারেই হৃদয়বিদারক। আমাদের একটি থানা পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এখানে একটি একাডেমি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।’
হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতালকে কেন্দ্র করে গত রোববার রণক্ষেত্রে পরিণত হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া। সকাল থেকেই হরতাল সমর্থকেরা বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে। এ সময় তারা বিভিন্ন সরকারি দপ্তর ও প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুরসহ অগ্নিসংযোগ করে।
ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন জানান, এসব বিষয়ে তদন্তের জন্য চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি জাকির হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন দাখিল করবে।
হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতাল থেকে রোববার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি, সামাজিক, সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ ছাড়া একটি মন্দিরের প্রতীমাও ভাঙচুর করা হয়।