ভাঙ্গুড়ায় জামাইয়ের মারপিটে শাশুড়ির মৃত্যুর অভিযোগ, আটক ১
পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলায় জামাই ও তার পরিবারের সদস্যদের মারপিটে আইরুন নেছা (৬০) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় পুলিশ একজনকে আটক করেছে। গতকাল মঙ্গলবার রাত দেড়টার দিকে ভাঙ্গুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই নারীর মৃত্যু হয়।
নিহত আইরুন নেছা উপজেলার খানমরিচ ইউনিয়নের হেলেঞ্চা গ্রামের মৃত আইয়ুব আলীর স্ত্রী। অভিযুক্ত জামাতা দিনমজুর রবিউল ইসলাম একই ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। এ ঘটনায় নিহতের ছেলের অভিযোগে পুলিশ একজনকে আটক করেছে।
লিখিত অভিযোগ ও পারিবারির সূত্রে জানা যায়, চার বছর আগে আইরুন নেছার মেয়ে আদুরী খাতুনের সঙ্গে রবিউলের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে রবিউল স্ত্রী ও এক কন্যাকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতেই থাকতেন। এক পর্যায়ে স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটলে গত আট মাস আগে রবিউল শ্বশুরবাড়িতে স্ত্রী-কন্যা ফেলে রেখে নিজের গ্রামে চলে যান। এরপর থেকে রবিউলের সঙ্গে শ্বশুরবাড়ির আর কোনো যোগাযোগ নেই।
এ অবস্থায় গত মঙ্গলবার আইরুন নেছা ইউনিয়নের চণ্ডিপুর বাজারে হতদরিদ্রদের খাদ্য সহায়তা প্রকল্পের আওতায় ১০ টাকা কেজিদরের চাল আনতে যান। সেখানে দেখা হয় জামাতা রবিউলের সঙ্গে। এ সময় রবিউলের অনুরোধে শাশুড়ি আইরুন নেছা জামাইয়ের বাড়িতে যান। বাড়িতে যাওয়ার পর আইরুন নেছার সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হলে রবিউল তার মা ও বোন রেবেকা মিলে বেধড়ক মারধর করেন। এতে অসুস্থ হয়ে পড়লে আইরুন নেছাকে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থা মুমূর্ষু হওয়ায় সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে জেলা সদর হাসপাতালে নিতে বলেন। কিন্তু রবিউল শাশুড়িকে জেলা সদরে না নিয়ে ভাঙ্গুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। পরে রাত দেড়টার দিকে তিনি মারা গেলে রবিউলসহ অন্যরা মৃতদেহ রেখে হাসপাতাল থেকে কৌশলে পালিয়ে যায়।
খবর পেয়ে আইরুন নেছার পরিবারের লোকজন হাসপাতালে গিয়ে মৃত দেখতে পায় এবং বাড়িতে নিয়ে যায়। আজ বুধবার সকালে মৃত আইরুন নেছার ছেলে আবু সামা বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ দিলে পুলিশ রবিউলের বোন রেবেকাকে আটক করে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়সাল বিন আহসান বলেন, ‘হত্যার অভিযোগে প্রধান অভিযুক্ত রবিউলের বোন রেবেকা খাতুনকে আটক করা হয়েছে। বাকিরা পলাতক রয়েছে। তাদেরও আটকের চেষ্টা চলছে।’