ভালো আছেন খালেদা জিয়া, ফোনে স্বজনদের সঙ্গে কথা বলছেন
‘হোম কোয়ারেন্টিনে’ চিকিৎসা চলছে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের ফলে গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’র দোতলায় তিনি কোয়ারেন্টিনে আছেন। সেখানে তাঁর সঙ্গে নার্সসহ সেবা প্রদানকারী কয়েকজন সদস্যও সেলফ কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন। এনটিভি অনলাইনকে এসব তথ্য জানিয়েছেন চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) সভাপতি ডা. হারুন আর রশীদ।
ড্যাব সভাপতি বলেন, ‘বিএসএমএমইউ থেকে রিলিজ পাওয়ার পর থেকে নিজ বাসায় হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। সেখানেই তাঁর চিকিৎসা চলছে। আপাতত বিএসএমএমইউর মেডিকেল বোর্ডের সেই প্রেসক্রিপশন ফলো করা হচ্ছে। সঙ্গে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা উনাকে দেখে চিকিৎসা দিচ্ছেন।’
ডা. হারুন বলেন, ‘ম্যাডাম দীর্ঘদিন কারাগারে ছিলেন। সেখানে তিনি যে অবস্থায় ছিলেন, বর্তমানে তার চেয়ে ভালো আছেন। আর তাঁর দীর্ঘ চিকিৎসা প্রয়োজন। এখন তাঁকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তিনি এখন অসুস্থ হলেও মানসিকভাবে আগের চেয়ে অনেক ভালো আছেন। পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ফোনে কথা বলছেন।’
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘ম্যাডাম কোয়ারেন্টিনে আছেন। এই সময়ে সোশ্যাল ডিসট্যান্স, অর্থাৎ একজন থেকে অপরজন যে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে চলার নিয়ম, তা যথাযথভাবে মেনেই ম্যাডামের সেবা প্রদানকারীরা সেবা দিচ্ছেন। ৭৫ বছর বয়সী খালেদা জিয়া রিউমাটিজ আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস এবং চোখ ও দাঁতের নানা রোগে আক্রান্ত। শারীরিক গুরুতর অসুস্থতা থাকলেও মানসিকভাবে স্বস্তিবোধ করছেন খালেদা জিয়া।’
ড্যাব সভাপতি হারুন আর রশীদ ও ড্যাবের সাবেক মহাসচিব জাহিদ হোসেন বলেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসার পুরো কার্যক্রম তদারক করছেন লন্ডন থেকে তাঁর বড় ছেলে তারেক রহমানের সহধর্মিণী ডা. জোবাইদা রহমান।
অধ্যাপক জাহিদ জানান, কোয়ারেন্টিনে ম্যাডামের (খালেদা জিয়ার) চিকিৎসা চলছে। তিনি শারীরিকভাবে গুরুতর অসুস্থ হলেও ঘরোয়া পরিবেশে এখন স্বস্তি বোধ করছেন। তাঁর মানসিক শক্তি বেড়ে গেছে। আগে যে বিপর্যস্ত চেহারা ছিল, সেটাও অনেকটা কমে আসছে। প্রিয়জনদের সঙ্গে মোবাইলে কথাবার্তা বলতে পারছেন, চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলছেন, যেটা সমস্যা সেটা জানাচ্ছেন। সম্পূর্ণ ঘরোয়া পরিবেশে তিনি সময় কাটাচ্ছেন। কখনো শুয়ে, কখনো বসে, কখনো বইপত্র পড়ে।
ডা. জেড এম জাহিদ জানান, বিএসএমএমইউ মেডিকেল বোর্ডের দেওয়া ওষুধপত্রে কিছুটা সংশোধন, পরিবর্তন এনেছেন ম্যাডামের ব্যক্তিগত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক টিম। ম্যাডামের হাত-পায়ে প্রচণ্ড ব্যথা রয়েছে। রিউমাটিজ আর্থ্রাইটিজের কারণে হাত-পায়ের জয়েন্টে গুটলি হয়েছে। এগুলো তাঁকে ভীষণ কষ্ট দিচ্ছে, প্রচণ্ড ব্যথা। এই ব্যথা উপশমের জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা ওষুধে কিছুটা পরিবর্তন ও সংযোজন এনেছেন।
ফিরোজায় এখন মেডিকেল বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক টিমের সদস্য ও নিকট আত্মীয়স্বজন ছাড়া কারো প্রবেশাধিকার নেই। নিরাপত্তাকর্মীরা সব সময়ে গেট বন্ধ রেখে পাহারা দিচ্ছেন।