ভৈরবে ২২ মুক্তিযোদ্ধার ভাতা বন্ধ হওয়ায় ক্ষোভ
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে হঠাৎ করে ২২ মুক্তিযোদ্ধার ভাতা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাঁদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত তারা প্রতি মাসে নিয়মিত ভাতা পেলেও গত ফেব্রুয়ারি মাসের ভাতা তারা পাননি।
কেন ভাতাভোগী মুক্তিযোদ্ধারা ভাতা পাননি, এর সদুত্তর দিতে পারেননি ব্যাংক ম্যানেজার এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান সবুজ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ভৈরবে সরকারি গেজেট অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ৪৪৯ জন। তাঁদের প্রত্যেকের ভাতার টাকা প্রতি মাসে সোনালী ব্যাংক ভৈরব বাজার শাখায় আসে। ফেব্রুয়ারি মাসে সবার ভাতা এলেও এই ২২ জনের ভাতা আসেনি। তাঁদের ভাতা ব্যাংকে না আসার বিষয়টি স্বীকার করেন ব্যাংক ম্যানেজার মো. সারোয়ার আলম। তবে কী কারণে বা কোন অভিযোগে তাঁদের ভাতা আসেনি, সেই বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলে জানান। ভাতা না পাওয়া মুক্তিযোদ্ধারা হলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা গিয়াস উদ্দিন জবু, রহিমা বেগম, বজল রানী দাস, আব্দুল কুদ্দুছ, আলেয়া বেগম, আব্দুস সাত্তার, হাসিনা বেগম, নরেশ চন্দ্র সূত্রধর, আ. সালাম মিয়া, আয়েশা খায়ের রিনা, আব্দুল বারি, রাহেলা নাজির, রেনুজা বেগম, কবির মিয়া, রুশেনা বেগম, জহুরা, ইসলাম মিয়া, মমতা বেগম, সুলতান উদ্দিন আহমেদ, আমিরুল আলম, রফিয়া বেগম ও মজিবুর রহমান। যাদের ভাতা বন্ধ করা হয়েছে তাদের মধ্যে নতুন ও পুরাতন উভয় তালিকায় তাঁরা মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন।
ভাতাভোগী মুক্তিযোদ্ধা মরহুম দুলাল খানের স্ত্রী আলেয়া বেগম বলেন, ভাতা চালুর পর থেকে আমার স্বামী ভাতা পান। তিনি মারা গেলে স্বামীর অধিকারে আমি ভাতা পাই। আমার স্বামী প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। কোনো অভিযোগ নেই তার বিরুদ্ধে। তবে কেন আমার ভাতা বন্ধ করল তার জবাব পাচ্ছি না।
ভৈরব উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা ফরহাদ আহমেদ জানান, গত বছর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে যাচাই-বাছাই কমিটি বাদ যাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের যাছাই-বাছাই করে ২২ জনের তালিকা পাঠায় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে। বাদ পড়াদের অনেকে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে (জামুকা) আপিল করেন। পরে জামুকা আপিল বোর্ডে আবেদনকারীর আবেদন যাচাই-বাছাই করে সাতজনের তালিকা পাঠায় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে। দুই অফিস থেকে তালিকা পাওয়ার পর অনেকের ভাতা চালু হয়। ভাতা বন্ধকারীদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ ছিল না। কিন্তু এখন দেখা যায় পুরোনো ও নতুন তালিকার মধ্য থেকে ২২ জনের ভাতা বন্ধ করা হয়েছে। কী কারণে বা কোন অভিযোগে ভাতা বন্ধ হলো-তা ভাতাভোগীরা এখনও জানতে পারেননি। এ নিয়ে ২২ ভাতাভোগী পরিবারের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান সবুজ জানান, ইতোমধ্যে বিষয়টি অবগত হয়েছি। ভাতা বন্ধ হওয়াদের কয়েকজন আমাকে এসে জানিয়েছেন বিষয়টি। কেন ভাতা বন্ধ হয়েছে, তা জানতে মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি। ভাতা দেওয়ার দায়িত্ব মন্ত্রণালয়ের। তারাই বলতে পারবে প্রকৃত ঘটনা।