মঙ্গলবার থেকে রাজশাহীর সব মার্কেট বন্ধের ঘোষণা প্রশাসনের
ওষুধ, খাবার ও কাঁচাবাজার ছাড়া মঙ্গলবার সকাল থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত রাজশাহী জেলার সব মার্কেট ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়েছে। জেলা আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির সভায় সোমবার এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে সোমবার বিকেল ৩টায় অনুষ্ঠিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হক।
সভা শেষে জেলা প্রশাসক জানান, জনস্বার্থে রাজশাহী মহানগরী এবং জেলার সব উপজেলার ওষুধ, খাবার ও কাঁচাবাজার ছাড়া অন্যান্য মার্কেট ও দোকানপাট বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কঠোরভাবে দায়িত্ব পালন করবে পুলিশ এবং প্রশাসন।
এর আগে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া রোধে সারা দেশের মার্কেট ও দোকানপাট বন্ধের সিদ্ধান্ত দিয়েছিল সরকার। কিন্তু গত ১০ মে থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকানপাট খোলার সরকারি সিদ্ধান্ত আসে। সেদিন থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে দোকানপাট খুলেছে।
তবে ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে দফায় দফায় সভা করে রাজশাহী সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন ও সদর আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা রাজশাহী মহানগরীর সব মার্কেট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তের কথা জানান।
তবে জেলা প্রশাসন থেকে বলা হয়েছিল, স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিকেল ৪টা পর্যন্ত মার্কেট ও দোকানপাট খোলা রাখা যাবে। ফলে রাজশাহী নগরীর ব্যবসায়ীরা মেয়র ও সংসদ সদস্যের সিদ্ধান্ত না মেনে মার্কেটগুলো খুলেছিল। আরডিএ মার্কেটের প্রধান গেট বাইরে থেকে বন্ধ রাখা হলেও পাশের বিভিন্ন বিকল্প রাস্তা দিয়ে ক্রেতাদের ভেতরে ঢুকিয়ে সামাজিক দূরত্ব না মেনেই ব্যবসা করছিলেন দোকানিরা। এসব দোকানে ঈদের কেনাকাটা মানুষের ছিল উপচেপড়া ভিড়। শিশুদের কোলে করেও কেনাকাটা করতে আসছিলেন নারীরা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তারা মাস্কও ব্যবহার করেননি। রাস্তায়ও বের হচ্ছিল অজস্র মানুষ। নগরীর রাস্তাঘাটে অটো ও ব্যাটারিচালিত রিকশার চলাচলও ছিল অনেকটাই স্বাভাবিক।
মার্কেট ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে জেলা প্রশাসন থেকে বলা হয়েছিল, ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ রাখলে খুব ভালো। কিন্তু যেহেতু রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তে দোকানপাট খোলা হচ্ছে, তাই তাদের বাধা দেওয়া যাবে না। তবে মার্কেটগুলোতে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত না হলে প্রশাসন অবশ্যই কঠোর হবে। আর রাজশাহীতে যে এটি মানা হচ্ছে না, ফেসবুকে এমন এক মন্তব্যের প্রতি উত্তরে জেলা প্রশাসক রোববার রাতে লেখেন, ‘আমরা আমজনতার আচরণ দেখলাম। কঠোর সিদ্ধান্ত আসছে।’ এর পরের দিনই কোর কমিটির সভায় দোকানপাট বন্ধের সিদ্ধান্ত এলো।
জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হক বলেন, ‘মঙ্গলবার (১৯ মে) থেকে সব ধরনের দোকানপাট, মার্কেট ও শপিংমল বন্ধ রাখা হবে। এই সিদ্ধান্ত রাজশাহী মহানগরী ছাড়াও সব উপজেলাতে কার্যকর করা হবে। তবে কৃষিপণ্য, কাঁচাবাজার, ওষুধ ও খাবারের দোকান এই নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে।’
প্রসঙ্গত, রাজশাহী জেলায় গত ১২ এপ্রিল প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এরপর শনিবার পর্যন্ত এ জেলায় ২১ জন শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছে একজন। গত শুক্রবার রাজশাহী মহানগরীতে নরসিংদী থেকে আসা এক নারীর শরীরে প্রথম করোনা শনাক্ত হয়।