মন্ত্রীত্ব হারানো ডা. মুরাদকে দলও বাদ দিয়েছে
প্রতিমন্ত্রীর পদ হারানোর পর ডা. মুরাদ হাসানকে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্যবিষয়ক পদ থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং অব্যাহতি কার্যকরের সুপারিশ করে কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জামালপুর জেলা শাখার জরুরি সভা ০৭ ডিসেম্বর, মঙ্গলবার, বিকেল ৪ ঘটিকায় বকুলতস্থ দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত মোতাবেক বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জামালপুর জেলা শাখার স্বাস্থবিষয়ক সম্পাদক ও জামালপুন-৪ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ডা. মুরাদ হাসানকে দলীয় ভাবমূর্তি বিনষ্ঠ, অগঠনতান্ত্রিক ও শৃঙ্খলা পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ততার অভিযোগে গঠনতন্ত্রের ৪৭(৯) ধারা মোতাবেক অব্যাহতি প্রধান করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের নিকট প্রেরণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।’
এর আগে আজ বিকেলেই ডা. মুরাদ হাসানকে জেলা কমিটি থেকে অব্যাহতির বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সচিবালয়ে তিনি বলেন, ‘মন্ত্রিসভা থেকে তিনি (ডা. মুরাদ হাসান) এখন পদত্যাগ করছেন। দলীয় পদ আছে তাঁর, ঢাকায় কোনো পদ নেই। তিনি জামালাপুর জেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। সেই পদ থেকেও তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হচ্ছে।’
মুরাদ হাসানের দলের প্রাথমিক সদস্যপদও বাতিল হবে কি না, জানতে চাইলে এ সময় ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা সেন্ট্রালি (কেন্দ্রীয় কমিটি) সিদ্ধান্ত নেবো। পরবর্তী ওয়ার্কিং কমিটিতে আমরা সিদ্ধান্ত নেবো।’
তবে সংসদীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে কি না, জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সেটি পরের ব্যাপার। এ বিষয়ে স্পিকার সিদ্ধান্ত নেবেন।’
এর আগে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আজ দুপুরে তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ নিজের পদত্যাগপত্র ইমেইলে পাঠিয়ে দেন।
‘ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে প্রতিমন্ত্রী পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন’- তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এনটিভি অনলাইনকে বলেছেন।
সম্প্রতি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নাতনিকে নিয়ে মন্তব্যের জন্য তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের পদত্যাগের দাবি তোলে বিএনপি। এ নিয়ে আলোচনার মধ্যেই চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি ও চিত্রনায়ক ইমনের সঙ্গে ডা. মুরাদের একটি ফোন আলাপের অডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। যেখানে দেশের একজন অভিনেত্রীর সঙ্গে মুরাদ হাসানের অশালীন ভাষায় কথা বলতে এবং তাঁকে হুমকি দিতে শোনা যায়।
বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে। একপর্যায়ে সোমবার রাতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন।