মাদারীপুরে নৌদুর্ঘটনা : স্পিডবোটচালক ‘গাঁজা ও ইয়াবায় আসক্ত’ ছিলেন
মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়ী পুরাতন ঘাটে বাল্কহেডের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় স্পিডবোটচালক মো. শাহ আলম (৩১) গাঁজা ও ইয়াবায় নেশাগ্রস্ত ছিলেন বলে জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কর্মকর্তা ডা. শশাঙ্ক চন্দ্র ঘোষ। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে এ তথ্য জানান তিনি।
ডা. শশাঙ্ক চন্দ্র ঘোষ জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার পর আহত স্পিডবোটচালক যখন শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন ছিলেন, তখন তাঁর ডোপ টেস্ট করা হয়। নমুনায় তিনি মাদকাসক্ত ছিলেন বলে নিশ্চিত হয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
শশাঙ্ক চন্দ্র ঘোষ আরও জানান, দুর্ঘটনার পর জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) চালক মো. শাহ আলমের ডোপ টেস্ট করাতে বলেন। পরে আমরা ঢাকা থেকে কিট এনে ডোপ টেস্ট করি। ডোপ টেস্টের ফলাফল পজিটিভ এসেছে। নমুনায় গাঁজা ও ইয়াবার অস্তিত্ব মিলেছে। অর্থাৎ, স্পিডবোটটি চালানোর সময় তিনি মাদকাসক্ত ছিলেন।
কাঁঠালবাড়ী ঘাট এলাকায় গত সোমবার সকালে দাঁড়িয়ে থাকা বাল্কহেডে ধাক্কা দিয়ে উল্টে যায় যাত্রীবোঝাই স্পিডবোট। সেখান থেকে একে একে উদ্ধার করা হয় শিশুসহ ২৫ জনের মরদেহ। হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান আরও একজন। জীবিত উদ্ধার করা হয় স্পিডবোটের চালকসহ পাঁচজনকে।
শিমুলিয়ার নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী পরিচালক শাহাদাত হোসেন জানান, স্পিডবোটটির কোনো নিবন্ধন ছিল না। এর চালকের ছিল না দক্ষতার সার্টিফিকেট।
লকডাউনে গণপরিবহণ বন্ধ থাকার পাশাপাশি নৌপথগুলোতে লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ রয়েছে। তারপরও যাত্রী নিয়ে নদীতে নামে ওই স্পিডবোট।
এ ব্যাপারে মাওয়া নৌ-ফাঁড়ির পরিদর্শক সিরাজুল কবির দাবি করেন, স্পিডবোটটি শিমুলিয়া ঘাট থেকে ছেড়ে যায়নি। লকডাউনের শুরু থেকে অসাধু একটি চক্র ঘাট এলাকাসংলগ্ন চর থেকে অবৈধভাবে যাত্রী তুলে চলাচল করছিল। সকালে ওই স্পিডবোটটি এমনই একটি চর থেকে ছেড়ে গেছে।
এদিকে, এ ঘটনায় জেলা প্রশাসন ও নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গত বুধবার জেলা প্রশাসনের ছয় সদস্যের তদন্ত কমিটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের তদন্তদল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।