মানবতাবিরোধী অপরাধ : মৌলভি নুরুল ইসলামের জামিন
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার আসামি মৌলভি নুরুল ইসলামকে (৬০) জামিন দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আসামির চিকিৎসার আবেদন গ্রহণ করে আজ বুধবার ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি আমির হোসেন ও মো. আবু আহমেদ জমাদার।
আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আবদুস সাত্তার পালোয়ান। প্রসিকিউটর ছিলেন রিজিয়া সুলতানা চমন।
এ বিষয়ে আইনজীবী আবদুস সাত্তার পালোয়ান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আসামি মৌলভি নুরুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে ব্রেইন স্ট্রোকজনিত কারণে প্যারালাইজড হয়ে গেছেন। এ কারণে জেলখানায় রেখে এ আসামির চিকিৎসা সম্ভব নয়। আদালতে তাঁর পক্ষে জামিন আবেদন করেছিলাম। শুনানি শেষে আদালত তাঁর চিকিৎসার স্বার্থে আইনজীবী ও আসামির ভাইয়ের জিম্মায় জামিন দিয়েছেন। এ সময়ে তিনি নিজ গ্রামের বাড়িতে থাকতে পারবেন।’
মামলার বিবরণে জানা যায়, এই মামলায় আসামির সংখ্যা ছিল ১৯ জন। তদন্ত চলার সময়ে দুজন আসামি মারা যান। এর মধ্যে তদন্ত সংস্থার পক্ষ থেকে ১৭ জনের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। এসব আসামির বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, নারী নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ, ধর্মান্তর ও দেশান্তর করাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ১৩ ঘটনায় ১২টি অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে ৯৪ জনকে হত্যাসহ নারী নির্যাতন এবং লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অনেক ঘটনা রয়েছে। ২০১৪ সালের ১২ মে থেকে ২০১৫ সালের ৮ অক্টোবর পর্যন্ত তদন্ত চলে।
এ মামলার ১৭ আসামির মধ্যে জামিনে থাকা বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ রশিদ মিয়াসহ গ্রেপ্তার ছিলেন পাঁচজন। অন্য চারজন হলেন কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি ও এলডিপি নেতা সালামত উল্লাহ খান, নূরুল ইসলাম, বাদশা মিয়া ও ওসমান গণি। এঁদের মধ্যে রশিদ মিয়া মারা গেছেন।
অন্যদিকে পলাতক ১২ আসামি হলেন মৌলভি মোহাম্মাদ জাকারিয়া শিকদার (৭৮), অলি আহমদ (৫৮), মো. জালাল উদ্দিন (৬৩), মোহাম্মদ সাইফুল ওরফে সাবুল (৬৩), মমতাজ আহমদ (৬০), হাবিবুর রহমান (৭০), আমজাদ আলী (৭০), মৌলভি রমিজ হাসান (৭৩), আবদুল শুক্কুর (৬৫), মো. জাকারিয়া (৫৮), মৌলভি জালাল (৭৫) ও আবদুল আজিজ (৬৮)। এই মামলাটি এখন সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে। এখন পর্যন্ত ২২ সাক্ষীর জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে বলে ট্রাইব্যুনাল সূত্রে জানা গেছে।