মানিকগঞ্জে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত

মানিকগঞ্জে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ভাষা সৈনিকদের সংবর্ধনা, আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে কর্মহীন সংস্কৃতিসেবীদের উপহার বিতরণ করা হয়েছে।
আজ রোববার সন্ধ্যায় জেলা শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি ফলকের পাদদেশে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। জেলার বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের অংশগ্রহণে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিফলক চত্বর ছিল অনেকটাই মুখর। সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব বাসুদেব সাহা ও রমেজা আক্তার মাহিনের সঞ্চালনায় আলোচনা ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক এস এম ফেরদৌস।
এ ছাড়াও পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট গোলাম মহিউদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম, মানিকগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মো. রমজান আলী, মানিকগঞ্জ ডায়াবেটিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুলতানুল আজম খান আপেল, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোমিন উদ্দিন খান, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সুদেব কুমার সাহাসহ আরও অনেকেই আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত দর্শকদের উদ্দেশে জেলা প্রশাসক এস এম ফেরদৌস বলেন, বাংলাকে সর্বত্র ব্যবহারে আমাদের সচেষ্ট থাকতে হবে। এ ভাষা শুধু আমাদের নয়, এ ভাষা এখন আন্তর্জাতিক ভাষা।

এদিকে অভিভাবকদের উদ্দেশে পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম বলেন, আপনারা আপনাদের সন্তানদের বিভিন্ন ভাষায় দক্ষ করে গড়ে তুলুন। তবে বাংলাকে সর্বোচ্চ অধিকার দেবেন। কেননা মায়ের ভাষাটাই যদি ঠিক মতো না জানে তবে বিদেশি ভাষা কখনই সঠিকভাবে শেখা সম্ভব নয়।
বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মহিউদ্দিন বলেন, কৃতী সন্তানদের জন্য সাধারণত মায়েদের রত্নগর্ভা বলা হয়ে থাকে। তাই আমি মনে করি বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে আত্মত্যাগকারী শহীদদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত একুশে ফেব্রুয়ারিকে রত্নগর্ভা দিবস বলা যেতে পারে।
পৌর মেয়র রমজান আলী আলোচনা সভার বক্তব্যে বলেন, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে আত্মত্যাগকারী ভাষা সৈনিক শহীদ রফিক আমাদের গর্ব। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হলো দেশের ভাষা ও স্বাধীনতা অর্জনে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের অনেকের নামেই রাজধানী ঢাকায় অনেক স্থাপনা থাকলেও আমাদের শহীদ রফিকের নামে কোনো স্থাপনা নাই। আমি আশা করব রাজধানী ঢাকায়ও শহীদ রফিকের নামে একটি উল্লেখযোগ্য স্থাপনা হবে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য শেষে জেলা প্রশাসক এস এম ফেরদৌস জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত শিশু-কিশোরদের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ এবং ভাষা সৈনিকদের ফুল দিয়ে বরণসহ সম্মাননা ক্রেস্ট ও প্রাইজবন্ড প্রদান করেন।
এর আগে সকালে সিংগাইরে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ভাষা শহীদ রফিকের নিজ বাড়িতে ফুলেল শ্রদ্ধা ও সম্মাননা ক্রেস্ট যথাযথ মর্যাদায় পাঠানো হয় বলে জেলা প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে।
সম্মাননা শেষে জেলার ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক সংগঠন জেলা শিশু একাডেমি, সপ্তসুর সংগীত নিকেতন, জেলা শিল্পকলা একাডেমি, সাবিস, শিল্পরথসহ বিভিন্ন সংগঠন গান, কবিতা আবৃত্তি ও নাচ পরিবেশন করে।