যে কোনো সময় যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা
জাতীয়তাবাদী যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটি যে কোনো সময় ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। গত কয়েকদিন ধরে সংগঠনের নেতাকর্মীরা নতুন কমিটি ঘোষণার প্রতীক্ষার প্রহর গুণছেন। তবে সেই প্রতীক্ষার শেষ হবে হাইকমান্ডের চূড়ান্ত নির্দেশনায়, এমনটা জানিয়েছেন সংগঠনটির দায়িত্বশীল নেতারা।
জানা গেছে, বর্তমান কমিটি ভেঙে দিয়ে যে কোনো সময় যুবদলের ‘সুপার ফাইভ’ কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা আসতে পারে।
সংগঠন সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার যুবদলের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সিনিয়র সহ-সভাপতি, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক ছাড়াও সহ-সভাপতি এবং যুগ্ম সম্পাদকদের সাথে কথা বলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত প্রত্যেক সহ-সভাপতি ও যুগ্ম সম্পাদকের সাথে পৃথকভাবে (ওয়ান টু ওয়ান) কথা বলেন তিনি।
এসময় তারেক রহমান সংগঠনের নেতাদের কাছ থেকে সাংগঠনিক মূল্যায়ন চান এবং নতুন নাকি পূর্ণাঙ্গ কমিটি চান এ বিষয়ে মতামত নেন। দীর্ঘ আলোচনা শেষে নতুন কমিটির পক্ষে মত দেন নেতারা। তাদের মতামতের ভিত্তিতে নতুন কমিটি গঠনের কাজ শুরু হয়। যে কোনো সময় বর্তমান কমিটি ভেঙে দিয়ে নতুন ‘সুপার ফাইভ’ কমিটির ঘোষণা আসতে পারে এমনটাই জানিয়েছেন সংগঠনের দায়িত্বশীল নেতারা।
২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি রাতে সংগঠনের কেন্দ্রীয়, ঢাকা মহানগর উত্তর ও মহানগর দক্ষিণের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়।
কেন্দ্রীয় পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট আংশিক কমিটির নেতারা হলেন- সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সিনিয়র সহ-সভাপতি মোর্ত্তাজুল করিম বাদরু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম নয়ন ও সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন হাসান।
মেয়াদ শেষের প্রায় তিন বছর পর ২০২০ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি যুবদলের কেন্দ্রীয় ১১৪ সদস্যবিশিষ্ট আংশিক কমিটি ঘোষণা করেন দায়িত্বশীল নেতারা। এ আংশিক কমিটি দিয়েই চলছে যুবদল। সম্পতি ৩৫১ সদস্যবিশিষ্ট একটি খসড়া কমিটি তারেক রহমানের কাছে জমা দেয় যুবদল। তবে তারেক রহমান যুবদলের কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে আগ্রহী নন। তিনি বর্তমান কমিটি ভেঙে নতুন কমিটি দেওয়ার বিষয়ে গুরুত্বে দেন।
যুবদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে নানা সমীকরণ মেলাচ্ছেন নেতাকর্মীরা। তাদের দাবি, নতুন কমিটিতে বর্তমান সভাপতি থাকছেন না এটা এক প্রকার ‘নিশ্চিত’। বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিনকে সভাপতিরে দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। তবে বর্তমান কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন হাসানকে সভাপতি করা হচ্ছে এটা নিয়ে জোড় আলোচনা রয়েছে। সাধারণ সম্পাদক পদেও রয়েছে নানা সমীকরণ।
ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রাজীব আহসানের নাম শোনা যাচ্ছে। আলোচনায় রয়েছেন ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিমও। সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে দুই জনের একজন আসতে পারেন। তারা হলেন, বর্তমান কমিটির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম নয়ন অথবা যুগ্ম সম্পাদক গোলাম মাওলা শাহীন। সাংগঠনিক সম্পাদক পদে ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকার আসতে পারেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়। এছাড়া ১ম যুগ্ম সম্পাদক পদে ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আক্রামুল হাসান মিন্টুর নাম শোনা যাচ্ছে। এছাড়া যুবদলের শীর্ষ নেতৃত্বে আলোচনায় রয়েছেন-যুবদলের সহ-সভাপতি এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন, মাহবুবুল হাসান ভূঁইয়া পিংকু, সহ-সাধারণ সম্পাদক কামাল আনোয়ার আহম্মেদ, ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশিদ হাবিব প্রমুখ।
যুবদলের কমিটি গঠন নিয়ে সর্বশেষ আপডেটের বিষয়ে জানতে চাইলে রোববার বিকেলে সংগঠনের সভাপতি সাইফুল আলম নীরব এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘যে কোনো মুহূর্তে নতুন কমিটির ঘোষণা আসতে পারে। নেতৃত্বে কারা আসবেন, এটা পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নির্ধারণ করবেন। তখনই আমরা দেখতে পাব। আপাতত আপডেট এতটুকুই।’
তিনি আরও বলেন, ‘নতুন কমিটি গঠনের বিষয়েই সবার ঐকমত্য আছে। এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন আমাদের পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।’
যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন হাসান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘ দল যেটা মনে করে, এটা চূড়ান্ত। কমিটি নিয়ে কোনো তথ্য আমার কাছে নাই। এটা দলীয় হাইকমান্ডের বিষয়।’