যৌতুকের জন্য গলাকেটে স্ত্রীকে হত্যা : স্বামীসহ গ্রেপ্তার ৩
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় যৌতুকের জন্য গলাকেটে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় স্বামীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। আজ শুক্রবার দুপুরে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ডালিম আহমেদ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- নবীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের বড় আলীপুর গ্রামের সবুজ মিয়ার ছেলে ও নিহত রাজনার স্বামী জাকারিয়া মিয়া (২৫), মৃত আনোয়ার মিয়া চৌধুরীর ছেলে সফিক মিয়া চৌধুরী (৫৬) ও তার ছেলে আকরাম চৌধুরী মাসুম (২১)।
এর আগে গত বুধবার হত্যার শিকার গৃহবধূ রাজনা বেগমের ভাই সুফি মিয়া বাদী হয়ে রাজনার স্বামী জাকারিয়া আহমদসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ওই মামলায় তিনজনকে আজ গ্রেপ্তার করে র্যাব-৯।
জানা যায়, প্রায় ৬ মাস আগে উপজেলার সদর ইউনিয়নের বড় আলীপুর গ্রামের সবুজ মিয়ার ছেলে জাকারিয়া মিয়ার সঙ্গে পশ্চিম তিমিরপুর গ্রামের মৃত আব্দুর রহিমের মেয়ে রাজনা বেগমের বিয়ে হয়। গত ১০-১২ দিন আগে রসুলগঞ্জ বাজারের সফিক মিয়া চৌধুরীর বাসায় ভাড়া নেন জাকারিয়া। সেখানে তিনি ও তার স্ত্রী রাজনা থাকতেন। গত সোমবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেলে রাজনা বেগমের মা রাজনাকে দেখতে ওই ভাড়া বাসায় যান। এ সময় দরজা বন্ধ দেখে ডাকাডাকি করেন। এক পর্যায়ে কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে দরজার ফাঁক দিয়ে মেয়ের রক্তাক্ত দেহ বিছনার ওপর পড়ে থাকতে দেখেন। এ সময় তাঁর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে নবীগঞ্জ পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে। সেখান থেকে গলাকাটা অবস্থায় রাজনার লাশ উদ্ধার করে। এ সময় একটি রক্তমাখা বটি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনার পর থেকে রাজনা বেগমের স্বামী জাকারিয়া মিয়ার কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না।
পরে রাজনার ভাই সুফি মিয়া যৌতুকের জন্য নির্যাতন করে গলাকেটে হত্যার অভিযোগে ৫ জনের বিরুদ্ধে নবীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। গতকাল বৃহস্পতিবার গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান থেকে মামলার প্রধান আসামি রাজনার স্বামী জাকারিয়া মিয়াকে (২৫) গ্রেপ্তার করে র্যাব-৯।
ওই রাতেই র্যাব-৯ এর অপর একটি টিম নবীগঞ্জ উপজেলার রসুলগঞ্জ বাজার থেকে মামলার আসামি ভাড়া বাসার মালিক সফিক মিয়া চৌধুরী (৫৬) ও তার ছেলে আকরাম চৌধুরী মাসুমকে (২১) গ্রেপ্তার করে।
র্যাব-৯-এর মিডিয়া কর্মকর্তা এএসপি সৌমেন মজুমদার গণমাধ্যমকে জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জাকারিয়া হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন।
এ প্রসঙ্গে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ডালিম আহমেদ বলেন, ‘এরই মধ্যে গ্রেপ্তার সফিক মিয়া চৌধুরী ও তার ছেলে আকরাম চৌধুরী মাসুমকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। ওই মামলার প্রধান আসামি জাকারিয়াকে কারাগারে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। আসামিদের অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড আবেদন করা হবে।’