যৌতুকের দাবিতে স্বামীর নির্যাতনে হাসপাতালে গৃহবধূ
মোংলায় লাখ টাকা যৌতুকের দাবি পূরণ করতে না পারায় স্বামী আসলাম হাওলাদারের (৩১) মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনে হাসপাতালের বেডে কয়েকদিন ধরে কাতরাচ্ছেন স্ত্রী সোনিয়া (১৯)।
এ ঘটনার গতকাল রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে আসলামের বিরুদ্ধে মোংলা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন নির্যাতনের শিকার সোনিয়ার ভাই রফিকুল ইসলাম।
ভুক্তভোগীর পরিবার ও থানার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জানা যায়, পৌর শহরের মাকড়ঢোন এলাকার বাসিন্দা মৃত আলকাজ হাওলাদারের ছেলে আসলাম হাওলাদারের (৩১) সঙ্গে বিয়ে হয় বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ উপজেলার জিউধারার বয়ারশিং গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নানের মেয়ে সোনিয়ার (১৯)। সাত মাস আগে বিয়ে হলেও বিয়ের পর থেকে স্বামী আসলাম এক লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে বিভিন্ন সময়ে স্ত্রী সোনিয়াকে নির্যাতন করে আসছিলেন। এভাবে কয়েক মাস ধরে নির্যাতন চলছিল। সর্বশেষ গত শনিবার সকাল ৯টায় আসলাম তার স্ত্রী সোনিয়াকে যৌতুকের দাবিতে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করে ঘরে আটকে রাখেন। পরে খবর পেয়ে সোনিয়ার ভাই রফিকুল ইসলাম এসে তাকে ঘর থেকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। তিন দিন ধরে হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছেন ওই গৃহবধূ।
নির্যাতনের শিকার হওয়া সোনিয়া বলেন, ‘আমার বাবা নেই, আমরা গরিব মানুষ। কীভাবে তাকে এক লাখ টাকা যৌতুক দেবো। এ নিয়ে বিয়ের পর থেকে আমার সঙ্গে ঝগড়াবিবাদ ও মারধর করে আসছিল স্বামী আসলাম। গত শনিবার আবারও ওই টাকা চেয়ে আমাকে বেদম মারপিট করে। আমার সারা শরীরের কোথাও মারতে বাকি রাখেনি। তিন দিন ধরে হাসপাতালে আমার খোঁজও কেউ নিতে আসেনি। স্বামী আসলাম এখনও ফোন করে যৌতুকের সেই এক লাখ টাকা চাইছেন। এ টাকা দেওয়ার সামর্থ্য আমার পরিবারের নেই।’
তবে অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে আসলাম বলেন, ‘এসব মিথ্যা, আমার স্ত্রীকে যৌতুকের জন্য মারধর করিনি। এটা পারিবারিক বিষয়।’
মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’