রমনা বটমূলে হামলা : ১৯ বছরেও শেষ হয়নি বিস্ফোরক মামলার বিচার
রমনা বটমূলে বোমা হামলার ঘটনায় হত্যা মামলার বিচার শেষ হলেও ১৯ বছরে বিস্ফোরক মামলার বিচার শেষ হয়নি। তবে আদালতে সাক্ষ্য গ্রহণ নিয়মিত না হওয়ায় বিচারকাজে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে বলে জানান মামলার সংশ্লিষ্টরা।
আজ থেকে ১৯ বছর আগে পহেলা বৈশাখে রমনা বটমূলে বর্ষবরণে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর ওই ঘটনায় হত্যা মামলা ও বিস্ফোরক আইনে পৃথক দুটি মামলা করে পুলিশ। হত্যা মামলার বিচার অনেক আগে শেষ হলেও, রায় এখনো কার্যকর হয়নি। অপরদিকে বিস্ফোরক মামলার বিচারকাজ কচ্ছপ গতিতে এগোচ্ছে।
বর্তমানে মামলাটি ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এ বিচারাধীন রয়েছে। এ মামলায় গত ১২ মার্চ সর্বশেষ সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন নির্ধারিত ছিল। কিন্তু ওই দিন মামলার সাক্ষী তদন্ত কর্মকর্তা অসুস্থ থাকায় আদালতে হাজির হতে পারেননি। এজন্য আদালত গত ১২ এপ্রিল পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ধার্য করেন। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে ১২ এপ্রিল আদালত ছুটি থাকায় সাক্ষ্য গ্রহণের কার্যক্রম হয়নি।
নথি থেকে জানা যায়, ২০০৯ সালে মামলাটিতে আটজন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ হয়। এর মধ্যে প্রায় চার বছর মামলাটির বিচার স্থগিত ছিল। হত্যা মামলার রায়ের পর ২০১৪ সালে মামলাটির বিচার পুনরায় শুরু হলে এখন অভিযোগপত্রের ৮৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ৫২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন আদালত।
এ বিষয়ে আদালতের প্রধান কৌঁসুলি (মহানগর পিপি) আব্দুল্লাহ আবু বলেন, ‘সাক্ষীদের অবহেলায় মূলত এ মামলার বিচার কাজ এগোচ্ছিল না। অবশেষে মামলাটি সাক্ষ্য গ্রহণের প্রায় শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে। আশা করছি, অতি দ্রুত মামলাটির বিচার শেষ হবে।’
এদিকে রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলার ঘটনায় করা হত্যা মামলায় ২০১৪ সালের ২৩ জুন মুফতি হান্নানসহ আটজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ এবং অপর ছয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।
বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে করা মামলার আসামিরা হলো মুফতি আবদুল হান্নান মুন্সী ওরফে আবুল কালাম ওরফে আবদুল মান্নান, আরিফ হাসান সুমন, মাওলানা আকবর হোসাইন ওরফে হেলালউদ্দিন, মো. তাজউদ্দিন, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, মাওলানা আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই, শাহাদত উল্লাহ ওরফে জুয়েল, হাফেজ আবু তাহের, মাওলানা আবদুর রউফ, মাওলানা সাব্বির ওরফে আবদুল হান্নান সাব্বির, মাওলানা শওকত ওসমান ওরফে শেখ ফরিদ ও হাফেজ ইয়াহিয়া।
২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান চলাকালে চালানো বোমা হামলায় ১০ ব্যক্তি নিহত হন। পরে ২০০৮ সালের ২৯ নভেম্বর হরকাতুল জিহাদ (হুজি) নেতা মুফতি আবদুল হান্নানসহ ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে ঢাকার সিএমএম আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে সিআইডি।