রাজশাহীতে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা, উপেক্ষিত স্বাস্থ্যবিধি
টানা ১১ দিন বন্ধ থাকার পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে শপিংমল, বিপণী বিতান ও মার্কেটগুলো খুলে দেওয়ার সরকারি ঘোষণার পর রাজশাহীতে নেমেছে মার্কেটমুখী মানুষের ঢল। রোববার সকাল থেকেই মার্কেটগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। পসরা সাজিয়ে বসেছেন ফুটপাতের ব্যবসায়ীরাও। এ ছাড়া নগরী জুড়ে পাড়া-মহল্লায় অবস্থিত দোকানগুলোও খোলা রয়েছে। এতে ঈদকেন্দ্রিক কেনাকাটা জমে উঠতে শুরু করেছে। মার্কেট খুলে দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। তবে স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে মানুষের মধ্যে উদাসীনতা দেখা গেছে।
রোববার সরেজমিনে ঘুরে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মার্কেটগুলোতে নানা বয়সী মানুষের ভিড় বাড়তে দেখা গেছে। মার্কেটগুলোতে অধিকাংশ ক্রেতা-বিক্রেতা মাস্ক ব্যবহার করলেও সামাজিক দূরত্বের বিষয়টি মানা হচ্ছে না। কিছু দোকানের বিক্রেতা ও ক্রেতাদের মাস্ক ছাড়াই বেচা বিক্রি করতেও দেখা গেছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, মার্কেটগুলোতে ঈদকেন্দ্রিক সবচেয়ে বেশি বেচাকেনা হয়। লকডাউনের কারণে গতবারের মতো এবারও দোকান খোলা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছিল। সরকার ব্যবসায়ীদের দিকে তাকিয়ে দোকানপাট খোলার অনুমতি দিয়েছে। এতে তারা খুশি। আর তারা স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছেন। মাস্ক ছাড়া কোনো ক্রেতাকে দোকানে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। দোকানে সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মানার উপকরণ রাখা হয়েছে। এ ছাড়াও ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে মাস্ক বিতরণ করা হচ্ছে। তবে সামাজিক দূরত্ব কিছু ক্ষেত্রে নিশ্চিত করা যাচ্ছে না।
আরডিএ মার্কেটের স্টুডেন্ট চয়েসের কর্মচারী মন্টু রানা জানান, দোকান বন্ধ থাকায় এবারের বেতন, ভাতা নিয়ে তিনি শঙ্কায় ছিলেন। কেননা মালিকের ব্যবসা না হলে তো তারা ঠিকভাবে বেতন পাবেন না। গত মাসের বেতনও তিনি এখনো পুরোপুরি পাননি। সরকার দোকান খোলার অনুমতি দেওয়ায় তারা খুশি।
আরডিএ মার্কেটে কেনাকাটা করতে আসা আফরিন জানান, তাঁর প্রয়োজনীয় কিছু জিনিসপত্র কেনা জরুরি হয়ে পড়েছে। কিন্তু লকডাউনের কারণে তিনি এতোদিন আসতে পারেননি। আজকে দোকানপাট খুলে দেওয়ায় তিনি বাজার করতে এসেছেন। তাঁর ছেলের ঈদের কেনাকাটাও তিনি সেরে নিলেন।
আফরিনের অভিযোগ, এরই মধ্যে বিক্রেতারা দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। সামনে হয়তো আরও বাড়বে।
এদিকে, নগরীর প্রবেশপথগুলোতে কিছুটা নজরদারি থাকলেও রোববার নগরীর মধ্যে যানবহন চলাচল স্বাভাবিক ছিল। চার্জার অটো, অটোরিকশা, সিএনজিসহ প্রাইভেট গাড়িগুলো স্বাভাবিকভাবেই চলাচল করেছে। নগরীর গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে পুলিশের উপস্থিতি থাকলেও মানুষকে সচেতন করতে হ্যান্ডমাইকে ঘোষণা দেওয়া ছাড়া তাদের আর কোনো কার্যক্রম দেখা যায়নি।
রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. আবু কালাম সিদ্দিক জানান, সরকারি নির্দেশনা মেনে রোববার সকাল থেকে ব্যবসায়ীরা শপিংমল, দোকানপাট খুলেছেন। ক্রেতা সমাগমও বাড়ছে। ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়কেই মাইকিং করে স্বাস্থ্যবিধি সর্ম্পকে সচেতন করা হচ্ছে। আর নগরীর প্রবেশ পথে বাইরের গাড়ি চলাচলে এখনো কড়াকড়ি আছে। এ বিষয়ে নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত সেটা অব্যাহত থাকবে।