রাজশাহীতে ড্রেনে ভাসছে টাকা, কুড়াতে মানুষের ভিড়
রাজশাহী রেলওয়ে অফিসার্স মেস ভবনের সামনে অনেক মানুষ। সবার চোখ ড্রেনের দিকে। ভিড় ঠেলে সামনে গিয়ে দেখা যায়, কিছু মানুষ কী যেন খুব খোঁজাখুঁজি করছে। কেউ একজন পেয়েও গেলেন প্রত্যাশিত বস্তুটি। তার হাতে ৫০০ টাকার নোট। কী আশ্চর্য, ড্রেনে ভাসছে টাকা!
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে আরো লোক সমাগম বেড়ে যায়। যারা এতক্ষণ ড্রেনে টাকার কথা শুনে দাঁড়িয়েছিলেন, তখন নিজেরাও নেমে গেলেন সেই টাকা কুড়াতে। কেউ দুই একটি নোট পেয়েছেন, আবার কেউ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
টাকাগুলো রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের। সেগুলো পুরোনো কাগজপত্রের ভেতর ছিল। নগরীর শিরোইল এলাকায় সড়ক পরিবহন গ্রুপের কার্যালয়।
আজ শনিবার দুপুরে সেখান থেকেই কাগজের সঙ্গে খেয়াল না করে টাকাগুলোও ফেলে দেওয়া হয়েছিল। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে খবর ছড়িয়ে পড়ে, এগুলো দুর্নীতি করে জমানো টাকা। ভয়ে ড্রেনে ফেলে দেওয়া হয়েছে।
এ খবর শুনে পুলিশ এবং গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও ড্রেনের কাছে ছুটে যান। পরে তারা টাকার রহস্য খুঁজে পান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ড্রেনে এক হাজার, ৫০০, ১০০, ২০, ১০ ও ৫ টাকার নোট পাওয়া গেছে। টাকা ভাসতে দেখে প্রথমে একজন এবং পরে অনেক মানুষ নেমে পড়ে ড্রেনে।
টুলু নামের এক ভাংগাড়ি বিক্রেতা জানান, টাকাগুলো অফিসার্স মেসের পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে চলে যাচ্ছিল। ড্রেনে ভাসতে দেখে তিনি নেমে পড়েন।
আসলাম নামের আরেকজন জানান, তিনি এক হাজার ও ৫০০ টাকার একটি করে দুটি নোট পেয়েছেন।
নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিবারণ চন্দ্র বর্মণ জানান, খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। প্রথমে টাকা কোথা থেকে এলো, তা নিয়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। পরে এর রহস্য জানা যায়। তবে যেভাবে খবর ছড়িয়ে পড়ে লাখ লাখ টাকা ড্রেনের পানিতে ভাসছে, তার সত্যতা পাওয়া যায়নি।
রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মতিউল হক টিটো বলেন, ‘আমরা খুবই বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে গেছি। ভাবতেই পারিনি পুরোনো কাগজের ভেতর টাকা থাকতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘কাগজগুলো ২০১০ সালের আগের। পঁচে গেছে। পোড়ানোর উপায় নেই। তাই ড্রেনে ফেলে দেওয়া হয়। পরে ড্রেনে টাকা পাওয়ার খবর শুনে আমরাও সেখানে যাই। তারপর ঘটনা দেখি।’
মতিউল হক বলেন, ‘পুরোনো কাগজের ভেতর সব মিলিয়ে দুই-তিন হাজার টাকা থাকতে পারে। কেউ হয়তো কাগজের ভেতর রেখেছিল। পরে ভুলে গেছে। কিন্তু খবর ছড়িয়েছে লাখ লাখ টাকা।’