রাস্তায় গণপরিবহন নেই, জনজীবনে ভোগান্তি
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বাড়তে থাকায় সরকার সারা দেশে এক সপ্তাহের জন্য কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। আজ মঙ্গলবার এর দ্বিতীয় দিন চলছে। গতকালের তুলনায় আজ রাস্তায় বেশি ব্যক্তিগত গাড়ি দেখা গেছে। কোথাও কোথাও যানবাহনের চাপে যানজটেরও সৃষ্টি হয়েছে।
তবে গণপরিবহন না থাকায় সাধারণ মানুষকে ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়েছে। সকালবেলায় অনেকে বাধ্য হয়ে দুই-তিন গুন ভাড়া দিয়ে কর্মস্থলে পৌঁছেছেন। এক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি অনেকটাই উপেক্ষিত থাকছে।
এদিকে প্রয়োজন ছাড়া মানুষকে বাসা থেকে বের হতে নিরুৎসাহিত করছে প্রশাসন। মাস্ক ছাড়া বের হলে জরিমানা করছে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এ ধরনের অভিযোগে আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত রাজধানীর ধানমন্ডির সাইন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় তিনজনকে আট হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
ধানমন্ডি এলাকায় দায়িত্বরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শেখ মামুনুর রশিদ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘রাজধানীতে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ যেন বের না হয় সে বিষয়ে নিরুৎসাহিত করছি। সেইসঙ্গে মাস্ক ছাড়া প্রাইভেট গাড়ি চালানোর কারণে সকাল থেকে তিনজনকে আট হাজার টাকার জরিমানা করা হয়েছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে মামুনুর রশিদ বলেন, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও প্রাইভেটকার চলছে জরুরি প্রয়োজনে। আমরা অনেককে জিজ্ঞেসাবাদ করছি, তাঁরা চিকিৎসার প্রয়োজনে বের হয়েছেন বলে নিশ্চিত হয়েছি। জরুরি প্রয়োজনে বের হলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে যেন বের হয় সেজন্য উৎসাহিত করছি।
এদিকে রাজধানীর গুলিস্তান, মতিঝিল, পল্টন, কারওয়ান বাজার, ধানমন্ডি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, রিকশা, প্রাইভেটকার, সিএনজি চলাচল করছে। অনেক জায়গায় ট্রাফিক জ্যামও লেগে আছে। গতকালের তুলনায় রাস্তায় মানুষের চলাচল বেশি দেখা গেছে।
ধানমন্ডি এলাকার সাইমন নামের এক যাত্রী এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘অফিসের কাজে বের হয়েছি। রাস্তায় গণপরিবহন নেই। তবে রিকশা-সিএনজি চলাচল আছে; ভাড়া বেশি রাখা হচ্ছে।’
আমেনা খাতুন নামের এক নারী বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগী ভর্তি আছে। তার জন্য রক্ত দরকার। এ জন্য আত্মীয়কে সঙ্গে নিয়ে রিকশায় করে যাচ্ছেন তিনি।
তবে হাইকোর্ট, সচিবালয়, ঢাকা জজ কোর্ট এলাকায় দেখা যায়, এখানকার সড়কে যান চলাচল অন্যান্য জায়গার তুলনায় কিছুটা কম।
গত ৩ এপ্রিল নিজ বাসা থেকে এক ব্রিফিংয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, ‘সোমবার থেকে সারা দেশে এক সপ্তাহের জন্য লকডাউন হবে।’ এরপর সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে ‘লকডাউন’ মেনে চলতে নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
যদিও গতকাল সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেছেন, ‘সরকার লকডাউন নয়, কঠোর বিধিনিষেধ জারি করেছে।’