রোগী করলেন তথ্য গোপন, আক্রান্ত হলেন মিটফোর্ডের ১১ চিকিৎসক-নার্স
নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা এক রোগী তথ্য গোপন করে ভর্তি ও অপরারেশন করানোর পর রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (মিটফোর্ড) সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ড বয় মিলিয়ে ১১ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কাজী মো. রশিদ উন নবী এনটিভি অনলাইনকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘ওই দিনের অপারেশনে থাকা দুজন সার্জন (সার্জারি বিভাগের একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট রেজিস্ট্রার ও একজন এইচএমও), দুইজন আনেস্থেশিয়লজিস্ট, চারজন নার্স, তিনজন স্টাফ কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছেন। এর বাইরে গাইনি বিভাগের আরেকজন চিকিৎসক আক্রান্ত হয়েছেন। মোট ১২ জন আক্রান্ত হয়েছেন।’
‘মূলত রোগীর মিথ্যা তথ্যের কারণেই চিকিৎসকরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। আর আমরাই বা কী করবো? একজন রোগীর ইমার্জেন্সি অপারেশনের দরকার হলে তো অপারেশন করতে হবে। না হলে রাস্তায় মারা যাবে। কী হবে বুঝতেছি না‘, যোগ করেন মিটফোর্ড হাসপাতালের পরিচালক।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার মিতুল চক্রবর্তী এনটিভি অনলাইনকে বলেন, গত শনিবার মিটফোর্ড হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে তথ্য গোপন করে একজন রোগী ভর্তি হন। নারায়ণগঞ্জ থেকে আসলেও রোগী এবং তাঁর তিন স্বজন জানায়, তাঁরা মাদারীপুর থেকে এসেছেন। রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ওইদিনই জরুরিভাবে অপারেশন করা হয়। তবে পরে রোগীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, তিনি নারায়ণগঞ্জ থেকে এসেছেন।
‘সন্দেহ হলে পরের দিন রোগীর টেস্ট করে করোনা পজিটিভ পাওয়া যায়। পরে তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ১১ জনকে কোয়ারেন্টিনে পাঠিয়ে টেস্ট করা হয়। তাদেরও করোনা পজিটিভ এসেছে।’
তথ্য গোপন না করলে এমন ঘটনা ঘটার আশঙ্কা কম থাকতো জানিয়ে সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক মিতুল চক্রবর্তী আরো বলেন, ‘আমরা সঠিক তথ্য জানলে সার্জারির সময়, করোনাভাইরাসের সুরক্ষা সরঞ্জাম নিয়েই অপারেশনে যেতাম। শুধু তাই নয়, আমরা সবাই ওইদিন আরো অপারেশনে অংশ নিয়েছি। এমনকি ওইদিন ও পরের দিন রোববারও রোগী দেখেছি।’
‘আমাদেরও পরিবার আছে। আর প্রতিদিনের মতো বাসায় গিয়েও সেনিটাইজড হয়েছি। যদি জানতাম এই রোগী করোনা পজেটিভ তাহলে অন্তত কোয়ারেন্টিনে থাকতে পারতাম। কিন্তু রোগীর তথ্য গোপনের কারণে আরো কতজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে তা জানি না’, যোগ করেন মিতুল চক্রবর্তী।