লকডাউনে দোকানপাট, শপিংমল বন্ধ থাকবে : মালিক সমিতি
চলমান বিধিনিষেধ আগামী ২৩ মে পর্যন্ত বাড়িয়ে আজ রোববার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। প্রজ্ঞাপনে হোটেল-রেস্তোরাঁর কথা উল্লেখ করা হলেও শপিংমল খোলা বা বন্ধ রাখার বিষয়ে কোনো কিছুই বলা হয়নি। তবে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি এ সময়ে দোকান ও শপিংমল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আজ রোববার বিকেলে প্রজ্ঞাপন জারির পর দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘নতুন করে লকডাউন বা বিধি-নিষেধের সময় বাড়ানোর কারণে দোকাপাট বন্ধ থাকবে।’
হেলাল উদ্দিন আরও বলেন, ‘ঈদের আগে সরকার ১৬ মে পর্যন্ত লকডাউন বা বিধি-নিষেধের সময় নির্ধারণ করেছিল। কিন্তু এখন নতুন করে আরও সময় বাড়ানো হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে আপাতত দোকান খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে না। বন্ধ থাকবে। তবে, পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
বিধি-নিষেধের মধ্যেও এ বছর দোকানপাট-শপিংমল খোলা ছিল। রমজান মাস ও ঈদকেন্দ্রিক বিক্রি কেমন হয়েছে- এ প্রশ্নে এফবিসিসিআইয়ের সাবেক এ সহসভাপতি বলেন, ‘বিক্রি ভালো হয়নি। রোজার শেষের দিকে কিছুটা বেড়েছিল। তবে কী পরিমাণ বিক্রি হয়েছে সেই হিসাব এখনো পাইনি। শপিংমল ও মার্কেট কমিটির পক্ষ থেকে এই তথ্য এখনো আসেনি। এজন্য আরও চার থেকে পাঁচদিন সময় লাগতে পারে। দোকন বন্ধ থাকলে তা আরও বেশি সময় লাগবে।’
নতুন প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, এ সময় শহরে তথা জেলার ভেতরে গণপরিবহন চলাচল করতে পারবে। আগের নির্দেশনা মতে, এক জেলা থেকে অন্য জেলায় গণপরিবহণ বন্ধ থাকবে। তাছাড়া নৌ, ট্রেন ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
সরকারের রাজস্ব আদায়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত সব দপ্তর, সংস্থা জরুরি পরিষেবার আওতামুক্ত থাকবে। খাবারের দোকান, হোটেল ও রেস্তোরাঁ কেবল খাবার বিক্রি বা সরবরাহ করতে পারবে।
গতকাল শনিবার বিধিনিষেধ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানান, করোনা সংক্রমণ রোধে চলমান লকডাউন ২৩ মে পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চলমান বিধিনিষেধ শেষ হচ্ছে ১৬ মে। এ ছাড়া ‘সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮’ সংশোধন করে জনগণের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করতে পুলিশকে বিচারিক ক্ষমতা দেওয়া হবে।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এ আইনের অধীনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা দায়িত্ব পালন করে থাকেন। এখন এ আইন সংশোধন করে পুলিশকে ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে। আরও এক সপ্তাহ বাড়লে বিধিনিষেধ ২৩ মে পর্যন্ত চলে যাবে।’
‘দেশে করোনাভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে। এতে মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়তে পারে। আর এ কারণেই সংক্রমণ এড়াতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে’, যোগ করেন প্রতিমন্ত্রী।
এর আগে কোভিড-১৯ সংক্রমণ আর মৃত্যুর ঊর্ধ্বগতি রুখতে সারা দেশে গত ৫ এপ্রিল থেকে শুরু হয় সাতদিনের বিধিনিষেধ। লকডাউন শেষে দুদিন বিরতির পর গত ১৪ এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে আটদিনের কঠোর বিধিনিষেধ শুরু হয়। সেই মেয়াদ শেষ হয় গত ২১ এপ্রিল মধ্যরাতে।
তবে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় বিধিনিষেধের মেয়াদ ২৮ এপ্রিল মধ্যরাত পর্যন্ত বাড়ানো হয়। পরে লকডাউন বাড়ানো হয় ৫ মে পর্যন্ত। এরপর গত ৩ মে মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে আবারও লকডাউন বাড়িয়ে আগামী ১৬ মে পর্যন্ত বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।