লালমাই উপজেলায় নেই ফায়ার সার্ভিস স্টেশন, ঝুঁকিতে বিভিন্ন স্থাপনা
উপজেলা প্রতিষ্ঠার চার বছরেও কুমিল্লার লালমাই ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন স্থাপন করা হয়নি। ফায়ার সার্ভিস স্টেশন না থাকায় উপজেলা সদরসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলের হাটবাজারে দোকানপাট, শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা অগ্নিঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। প্রতিবছরই অগ্নিকাণ্ডে মানুষের কোটি কোটি টাকার সম্পদ পুড়ে নষ্ট হচ্ছে।
উপজেলা সদর ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের হাট-বাজারগুলোর কোথাও অগ্নিকাণ্ড ঘটলে দক্ষিণের উপজেলা লাকসাম অথবা উত্তরের উপজেলা কুমিল্লা সদর দক্ষিণের ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ওপর ভরসা করতে হয়। এসব উপজেলা থেকে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পৌঁছাতে আগুনে সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
সম্প্রতি গত ১ মে লালমাই উপজেলার ভুশ্চি বাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে লাকসাম থেকে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা সময় লেগে যায়। ততক্ষণে আগুনে বাজারের পাঁচটি দোকানের সবকিছু পুড়ে প্রায় কোটি টাকার ক্ষতি হয়ে যায়। অপরদিকে, গত বছর উপজেলার বাগমারা বাজারেও এমন একাধিক অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। যেখানে ফায়ার সার্ভিস পৌঁছাতে বিলম্ব হওয়ায় ক্ষতির পরিমাণ কয়েকগুণ বেড়েছে।
এদিকে উপজেলা পরিষদ ও থানার অস্থায়ী কার্যালয় ছাড়াও পল্লী বিদ্যুতের একটি জোনাল অফিস রয়েছে উপজেলা সদরের বাগমারায়। ২০ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি হাসপাতাল, ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র, ইউনিয়ন কমিউনিটি ক্লিনিক ও এক ডজন বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে উপজেলায়। রয়েছে মেঘনা গ্রুপের একটি শিল্প কারখানা। রিদম ফার্নিচারের দুটি ফ্যাক্টরিসহ শতাধিক উৎপাদনমুখী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। পাঁচ শতাধিক বহুতল ভবন রয়েছে। দুটি স্নাতক কলেজ, ২৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ২৪টি মাদ্রাসা ও ৬৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব স্থাপনায় অগ্নিকাণ্ড ঘটলে তা ভয়াবহ আকার ধারণ করার ঝুঁকি রয়েছে।
এ বিষেয়ে লালমাই প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও সাপ্তাহিক লালমাই বার্তা’র সহ-সম্পাদক মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘উপজেলা পর্যায়ে ফায়ার স্টেশন না থাকায় থানা পুলিশসহ দুইএকটি বড় প্রতিষ্ঠান ছাড়া কেউ অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নেয়নি। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের কাছে আমাদের দাবি, দ্রুততম সময়ের মধ্যে লালমাই উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপন করতে হবে।’
এ বিষয়ে লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আইয়ুব বলেন, ‘লালমাইয়ে ফায়ার স্টেশন স্থাপন করতে অর্থমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট দপ্তরে কথা বলেছেন বলে জেনেছি। আশা করছি শিগগিরই দুর্ভোগ কমবে।’
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন কুমিল্লার সহকারী পরিচালক মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘সরকারের ৬৭ প্রকল্পে লালমাইকে অর্ন্তভুক্তির প্রস্তাব প্রক্রিয়াধীন। প্রস্তাবটি অনুমোদন হলে লালমাইয়ে এক একর জমির ওপর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন প্রতিষ্ঠিত হবে।’