শাহবাগে গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে পুলিশের ‘হত্যাচেষ্টা’ মামলা
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কারাবন্দি লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর প্রতিবাদে শাহবাগে মশাল মিছিলকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে গতকাল শুক্রবার। এ ঘটনায় গতকাল মধ্যরাতে পুলিশ সদস্যদের হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে মামলা করা হয়েছে। মামলায় সাতজনের নাম উল্লেখ করে এক থেকে দেড়শ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
আজ শনিবার বিকেলে শাহবাগ থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মাহবুব আলম এনটিভি অনলাইনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘পুলিশি হত্যাচেষ্টার ঘটনায় গ্রেপ্তার সাতজনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। উপপরিদর্শক (এসআই) মিন্টু মিয়া মামলার বাদী।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন তামজিদ হায়দার (২২), নজিব আমিন চৌধুরী (২৭), তানজিমুর রহমান (২২), আকিব আহমেদ (২২), আরাফাত (২৬), নাজিফা জান্নাত (২৪) ও জয়তী চক্রবর্তী (২৩)।
মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শহীদুল ইসলাম বলেন, গ্রেপ্তার সাতজনের প্রত্যেকের সাতদিন করে রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
ছয় মাসের বেশি সময় আগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে বন্দি অবস্থায় থাকা মুশতাক আহমেদ গত বৃহস্পতিবার মারা যান। এর প্রতিবাদে গতকাল শুক্রবার দিনভর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বিক্ষোভ করেন বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
বামধারার ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা শুক্রবার সন্ধ্যায় টিএসসি থেকে মশাল মিছিল নিয়ে শাহবাগে এলে তাদের বাধা দেয় পুলিশ। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বেঁধে যায়। আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এ সংঘর্ষে ৩০ জন আন্দোলনকারী আহত হয়েছেন।
এদিকে ডিএমপির রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) সাজ্জাদুর রহমানের দাবি, আন্দোলনকারীদের হামলায় অন্তত ১৫ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
ঘটনা সম্পর্কে গতকাল পুলিশের এই কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘সন্ধ্যার দিকে একদল টিএসসি থেকে মশাল মিছিল নিয়ে জাদুঘরের সামনে আসলে আমরা তাদেরকে ইউটার্ন নিতে বলি। পরে তারা মশালের লাঠি দিয়ে পুলিশের ওপর হামলা করে। তখন পুলিশ আত্মরক্ষার্থে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এদের একটা গ্রুপ বামপাশ দিয়ে চলে যায়, আরেকটা গ্রুপ পিছনে ফিরে পুলিশের উপর অসংখ্য ইট-পাটকেল ছুড়ে। এতে আমাদের ১২-১৪ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। আমার নিজেরও পায়ে আঘাত লেগে ব্লিডিং হয়েছে।’
আন্দোলনকারীদের আহত হওয়ার বিষয়ে ডিসি আরও বলেছিলেন, ‘আমরা জানি না তারা কীভাবে আহত হয়েছে। কিন্তু তারা যেভাবে ইট-পাটকেল মেরেছে, তাদের ইট-পাটকেলেই তারা আহত হয়ে থাকতে পারে। পুলিশ শুধু তাদের ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়েছে। তারা যখন ইট-পাটকেল মারছে, তখন পুলিশ চার-পাঁচটি টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে।’