শাহবাগে গ্রেপ্তার সাতজনকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ
লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর প্রতিবাদে শাহবাগে মশাল মিছিলের সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় করা হত্যাচেষ্টার মামলায় গ্রেপ্তার সাতজনকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে এ ঘটনায় করা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ১৩ এপ্রিল দিন ধার্য করেছেন আদালত।
আজ শনিবার আসামিদের ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে তদন্ত কর্মকর্তা সাতদিনের রিমাণ্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম মোর্শেদ আল মামুন ভূঁইয়া রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুর করে তিন কার্যদিবসের মধ্যে একদিনের জন্য প্রত্যেককে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেন।
অপরদিকে তাদের জামিন শুনানির জন্য আগামী ৩ মার্চ দিন ধার্য করেন আদালত।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন তামজীদ হায়দার (২২), নজিব আমিন চৌধুরী (২৭), তানজিমুর রহমান (২২), আকিব আহমেদ (২২), আরাফাত (২৬), নাজিফা জান্নাত (২৪) ও জয়তী চক্রবর্তী (২৩)।
ছয় মাসের বেশি সময় আগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে বন্দি অবস্থায় থাকা মুশতাক আহমেদ গত বৃহস্পতিবার মারা যান। এর প্রতিবাদে গতকাল শুক্রবার দিনভর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বিক্ষোভ করেন বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
বামধারার ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা শুক্রবার সন্ধ্যায় টিএসসি থেকে মশাল মিছিল নিয়ে শাহবাগে এলে তাদের বাধা দেয় পুলিশ। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বেঁধে যায়। আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এ সংঘর্ষে ৩০ জন আন্দোলনকারী আহত হয়েছেন।
এদিকে ডিএমপির রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) সাজ্জাদুর রহমানের দাবি, আন্দোলনকারীদের হামলায় অন্তত ১৫ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
ঘটনা সম্পর্কে গতকাল পুলিশের এই কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘সন্ধ্যার দিকে একদল টিএসসি থেকে মশাল মিছিল নিয়ে জাদুঘরের সামনে আসলে আমরা তাদেরকে ইউটার্ন নিতে বলি। পরে তারা মশালের লাঠি দিয়ে পুলিশের ওপর হামলা করে। তখন পুলিশ আত্মরক্ষার্থে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এদের একটা গ্রুপ বামপাশ দিয়ে চলে যায়, আরেকটা গ্রুপ পিছনে ফিরে পুলিশের উপর অসংখ্য ইট-পাটকেল ছুড়ে। এতে আমাদের ১২-১৪ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। আমার নিজেরও পায়ে আঘাত লেগে ব্লিডিং হয়েছে।’
আন্দোলনকারীদের আহত হওয়ার বিষয়ে ডিসি আরও বলেছিলেন, ‘আমরা জানি না তারা কীভাবে আহত হয়েছে। কিন্তু তারা যেভাবে ইট-পাটকেল মেরেছে, তাদের ইট-পাটকেলেই তারা আহত হয়ে থাকতে পারে। পুলিশ শুধু তাদের ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়েছে। তারা যখন ইট-পাটকেল মারছে, তখন পুলিশ চার-পাঁচটি টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে।’