বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টে শিক্ষাবৃত্তির জন্য আবেদন করেছেন প্রতিবন্ধকতা জয় করা অদম্য তামান্না নূরা।

তামান্না নূরা জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরামর্শে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টে তিনি আবেদন করেছেন।

বুধবার সকাল ৯টার দিকে তামান্না আক্তার নূরার বাসা থেকে আবেদনপত্রটি নেন যশোর জেলা প্রশাসনের পক্ষে ঝিকরগাছা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ডা. কাজী নাজিব হাসান। আবেদনপত্রটি তিনি জেলা প্রশাসকের কাছে পৌঁছে দেন। আবেদনপত্রটি আগামী শনিবার যশোর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে পাঠানো হবে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।

এ বিষয়ে তামান্না নূরা আরও বলেন, গত ২৪ জানুয়ারি  প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করাসহ দুটি স্বপ্নের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বরাবর চিঠি লিখেছিলেন তিনি। সে চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ১৪ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় ও বিকেলে ফোন কল দিয়ে তামান্নাকে অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তাঁর বোন শেখ রেহানা। তামান্নার স্বপ্ন পূরণে যেকোনো সহযোগিতার আশ্বাস দেন শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। প্রধানমন্ত্রী সবসময় তামান্নার পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। এবং তামান্না প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে বঙ্গবন্ধু ট্রাস্টে আবেদন করেন বলে জানান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার প্রতি তামান্না অশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

এ ছাড়া ১৫ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টায় তামান্নাকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাতে ফোন করেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। ফোনে তামান্নার সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছাও জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপুমনি।

যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান বলেন, ‘তামান্নার স্বপ্নপূরণে পাশে দাঁড়িয়েছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তাঁর বোন শেখ রেহানা। আশা করি তামান্নার স্বপ্ন পূরণে কোনো বাধা থাকবে না। সে আরও এগিয়ে যাবে।’

যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বাঁকড়া ইউনিয়নের আলীপুর গ্রামের রওশন আলী ও খাদিজা পারভীন শিল্পী দম্পতির তিন সন্তানের মধ্যে বড় তামান্না নূরা। জন্ম থেকেই তামান্নার দুটি হাত ও ডান পা নেই। বাঁ পা দিয়ে লিখে সব বাধা অতিক্রম করে এইচএসসি পর্যন্ত সাফল্য অর্জন করেছেন তামান্না। তিনি যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বাঁকড়া ডিগ্রি কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এবারের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফলে জিপিএ-৫ পেয়েছেন। এর আগে তামান্না ২০১৯ সালে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বাঁকড়া জে কে মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ পান।২০১৬ সালে ওই স্কুল থেকে জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ এবং ২০১৩ সালে স্থানীয় আজমাইন এডাস স্কুল থেকে পিইসিতে জিপিএ-৫ পান তামান্না। বাবা রওশন আলী ঝিকরগাছা উপজেলার পৌদাউলিয়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসার (ননএমপিও) শিক্ষক। মা খাদিজা পারভীন শিল্পী গৃহিণী। ছোট বোন মুমতাহিনা রোশনি বাঁকড়া জে কে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। একমাত্র ভাই মুহিবুল্লা তাজ আজমাইন এডাস স্কুলে প্রথম শ্রেণিতে পড়ে।

তামান্না নূরা জানান, তিনি শিক্ষা জীবন শেষ করে বিসিএস-এ উত্তীর্ণ হয়ে সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হতে চান। এমনকি গবেষণায়ও নিজেকে নিয়োজিত করতে চান বলে তিনি জানান।