ষাঁড়ের নাম চিতাবাঘ, দাম ১০ লাখ টাকা!
চিতাবাঘ নাম হলেও এটা কিন্তু বাঘ নয়। এটি খুলনার তেরখাদা উপজেলার কাটেঙ্গা গ্রামের কায়নাতের শখের তেজদীপ্ত ষাঁড়ের নাম। গায়ের রঙের কারণে ষাঁড়টির মালিক নাম রেখেছেন চিতা বাঘ। ক্রেতা ও ব্যাপারিদের কাছে তিনি এটির দাম হেঁকেছেন ১০ লাখ টাকা!
চার বছর আগে জন্ম নেওয়া ষাঁড়টির আকৃতি এখন বিশাল। আসন্ন ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে এবার বাজারে তুলতে চাচ্ছেন ‘চিতাবাঘকে’।
কায়নাত বলেন, ‘ষাঁড়টির দৈর্ঘ্য সাড়ে ৫ হাত, প্রস্থ সাড়ে ৩ হাতের বেশি। ওজন ৪০ মণ। কালো আর সাদা রঙের ষাঁড়টি ক্রস জাতের। দেশীয় পদ্ধতিতে নিজের খামারে মোটাতাজা করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘নিজের সন্তানের মতো লালন-পালন করেছি চিতাবাঘকে। সময়ের সাথে সাথে ওর আকৃতি বেড়েছে। চেহারা ও স্বভাবে সে এখন সত্যিই চিতা বাঘ। এলাকার কোনো গরু তার সাথে যুদ্ধে পারে না।’
‘এবার গরুর জন্য খড় সংকট ছিল। কষ্ট করে চার বছর ধরে গরুটি লালন পালন করে করোনার কারণে এবার দাম নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় আছি,’ যোগ করেন কায়নাত।
কায়নাত জানান, শখের বশে তিনি দীর্ঘদিন গরু পালন করেন। চিতা বাঘ ছাড়াও তাঁর আরো কয়েকটি গরু রয়েছে।
কায়নাতের ছেলে এস এম বায়েজিদ হোসেন বলেন, ‘চিতা বাঘ প্রতিদিন খড়, ভূষি ও ঘাস খায়। চিতা বাঘ আমাদের পরিবারের সদস্য হিসেবে বড় হয়েছে।’
স্থানীয় কসাইরা বলেন, গরুটির গোশত হতে পারে ১৮ মণ। চিতাবাঘকে দেখতে উৎসুক মানুষের ভিড় বাড়ছে। সবাই এক নজর দেখতে চায় বিশাল আকৃতির গরুটিকে। রাস্তায় বা বাড়ির পাশে গোসল করাতে নিয়ে গেলে অনেকে ছবি তুলে নিয়ে যান। আবার কেউ কেউ গরুর সঙ্গে সেলফি তোলেন ও ভিডিও করেন।
খুলনা জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, খুলনায় মোট ৬ হাজার ৮৯০ জন গবাদি পশুর খামারি রয়েছেন। সবচেয়ে বেশি খামার আছে ডুমুরিয়া, তেরখাদা ও বটিয়াঘাটা উপজেলায়। এসব খামারে মোট গবাদি পশু রয়েছে ৪৫ হাজার ১৪৮টি। এর মধ্যে ৪০ হাজার ৯৬৮টি গরু ও ৪ হাজার ১৮০টি ছাগল ও ভেড়া।
অনেকে বলছেন, করোনার কারণে সামগ্রিক অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব চলছে। বিপাকে পড়ছেন মধ্যবিত্ত শ্রেণি। যারা কয়েকজন মিলে (শেয়ার) কোরবানি দেন। করোনার কারণে এ শ্রেণি সবচেয়ে বিপাকে থাকায় অনেকেই চলতি বছর কোরবানি দিতে পারবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। এতে কোরবানির পশু বিক্রি কমে যেতে পারে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কোরবানিকে সামনে রেখে ব্যস্ত খুলনার গবাদিপশুর খামার মালিকরা। সম্পূর্ণ দেশীয় খাবারের ওপর নির্ভর করে পশুগুলোকে কোরবানির উপযুক্ত করে গড়ে তুলছেন তারা।
খুলনা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা এসএম আউয়াল হক বলেন, ‘এদেশের ধর্মভীরু মানুষ ঠিকই কোরবানি দেবেন। যার কারণে কোরবানির পশুও বিক্রি হবে। খামারিদের খুব বেশি হতাশ হওয়ার কিছু নেই। এবার করোনার কারণে পশুরহাটে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে বেচা-কেনা হবে। এছাড়া অনলাইনের মাধ্যমে কোরবানির পশু বিক্রি এখন ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আমরাও চেষ্টা করছি অনলাইনে খামারিদের গরু বিক্রিতে সহযোগিতার জন্য।’