সরকার লকডাউন খুলে গণসংক্রমণের সুযোগ সৃষ্টি করেছে : রিজভী
সরকার লকডাউন খুলে দিয়ে গণসংক্রমণের সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রদলের উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণের সময় আজ রোববার এ কথা বলেন রিজভী।
এ সময় রিজভী আরো বলেন, ‘মানুষের কী হবে, সরকার সে চিন্তা না করে লকডাউন খুলে দিয়েছে, দোকানপাট খুলে দিয়েছে। চার মাস মানুষকে খাওয়ানো যেত। এর মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া যেত। কিন্তু সরকার ওইদিকে যায়নি, সরকারের টাকা দরকার। মানুষের জীবন সরকারের কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। লকডাউন খুলে দেওয়ায় সারা দেশে গণসংক্রমণ হচ্ছে। গণসংক্রমণ রোধ করা যেত। সরকার তা না করে, আরো বিস্তার করার সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে।’
সরকারের সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘জনগণের দ্বারা নির্বাচিত না হলে, অবৈধভাবে ক্ষমতা থাকলে, জনসমর্থন না থাকলে মানুষের বেঁচে থাকার পরোয়া করে না। মানুষ বাঁচল কী মরল, এটা সরকার দেখবে না। তার টাকা দরকার, টাকাই সব। এ টাকা দিয়ে কয়েকটি ফ্লাইওভার তৈরি করে উন্নয়ন দেখাতে চায়। কীসের উন্নয়ন? আজ হাসপাতাল কই, স্যানিটাইজার তৈরি করেন না কেন? ডাক্তার মারা যাচ্ছে, যারা সেবা দিচ্ছে, তারা মারা যাচ্ছে। তাহলে সরকারের উন্নয়ন কোথায়? সরকারের উন্নয়নের টাকা ক্যাসিনো থেকে পাওয়া যায়। বস্তা বস্তা টাকা পাওয়া যায় যুবলীগের নেতাকর্মীদের কাছে। এটাই হলো সরকারের উন্নয়ন।’
রিজভী বলেন, ‘আমরা সরকারের ত্রাণ পাই না। তারপরও নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি, ত্রাণ বিতরণ করছি। সারা দেশে ১৩ লাখ পরিবারকে বিএনপির পক্ষ থেকে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এটাই হলো বিএনপি। বিএনপি মানুষের কল্যাণে রাজনীতি করে। বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল, শ্রমিক দলের নেতাকর্মীরা ত্রাণ সহায়তা করছে। কিন্তু সরকারের এটা সহ্য হচ্ছে না। বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের নামে মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। হয়রানি করা হচ্ছে। যারা সত্য কথা বলছে, তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হচ্ছে। অনেক সাংবাদিক, ব্লগারকে ডিজিটাল আইনে মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
দুর্যোগ-মহামারির সঙ্গে দুর্ভিক্ষের সম্পর্ক রয়েছে মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘করোনা মহামারির পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য বাংলাদেশ সময় পেয়েছিল। জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি, মার্চ মাসেও আমরা সময় পেয়েছিলাম। কিন্তু সরকার সে সময় মানুষকে সচেতন করেনি বা করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি, অন্য একটি অনুষ্ঠান নিয়ে ব্যস্ত ছিল। আর এখন গ্রামে-গঞ্জে, পাড়া-মহল্লায় করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। সরকারের একজন অতিরিক্ত সচিব চিকিৎসার অভাবে গতকাল মারা গেছেন। দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে। রংপুর-কুড়িগ্রামসহ দেশের অন্যান্য স্থানে মানুষ খাদ্যের জন্য বিক্ষোভ করছে। ত্রাণের ট্রাক আটকে দিচ্ছে, লুট করছে। কখন মানুষ এই কাজ করে? যখন পেটের মধ্যে ক্ষুধায় দাউদাউ করে আগুন জ্বলে, তখন মানুষ এ রকম পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। এ রকম পরিস্থিতিতে মানুষের টাকায় কেনা ত্রাণ গরিব ও অসহায় মানুষকে না দিয়ে আওয়ামী লীগের লোকেরা আত্মসাৎ করছে।’