সাইমেক্স লেদারের এমডি ও তাঁর স্ত্রীর জামিন বাতিল
ভুয়া এলসির মধ্যমে ঢাকা ব্যাংকের ২১ কোটি টাকার অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে সাইমেক্স লেদার প্রোডাক্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তালহা শাহরিয়ার আইয়ুব ও তাঁর স্ত্রী পরিচালক তানিয়া রহমানের জামিন বাতিল করেছেন আদালত।
একইসঙ্গে আগামী সাত কার্য দিবসের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ শেখ হাফিজুর রহমান এ আদেশ দেন।
আদেশে বিচারক বলেন,‘আসামীরা জামিনের জন্য যেসব তথ্য দিয়েছে;তা গ্রহনযোগ্য নয়। এছাড়া আসামীরা বিচারিক আদালতে জামিন বিষয়ে মিথ্য তথ্য দিয়েছিল। এসব বিবেচনায় জামিন বাতিল করা হলো। ’
দুদকের কৌঁসুলি মীর আহমেদ আলী সালাম সাংবাদিকদের বলেন,জামিন আদেশের বাতিলে বিচারক বলেন, আসামিদের সাত কার্যদিবসের মধ্যে নিম্ন আাদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে। ওই সময়ের মধ্যে আত্মসমর্পণ না করলে সিএমএম আদালতকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
দুদকের কৌঁসুলি বলেন, ‘বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট আসামিদের বয়স্ক ও অসুস্থতা এবং মহিলা বিবেচনায় জামিন মঞ্জুর করেন। কিন্তু মামলার নথি পর্যালোচনায় দেখা যায় আসামিদের বয়স মামলার এহাজারে উল্লেখ নেই এবং আসামিদের দাখিল করা কাগজপত্রে বয়স পাওয়া যায় না। এ ছাড়া আসামিরা যে জটিল রোগে আক্রান্ত এ সংক্রান্ত কোনো মেডিক্যাল ডকুমেন্ট দেখাতে পারেননি। তাই আসামিদের জামিন বাতিল করা হলো।’
২০১৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় সাইমেক্স লেদার প্রোডাক্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তালহা শাহরিয়ার আইয়ুব ও তাঁর স্ত্রী পরিচালক তানিয়া রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদকের সহকারী পরিচালক মো. ইকবাল হোসেন। এর পরে এ বছর টি এস আইয়ুব ও তানিয়া রহমান ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মামুনুর রশিদ শুনানি শেষে আসামিদের জামিন দেন। সেই জামিন আদেশের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ ঢাকার মহানগর সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতে রিভিশন (পুন:বিবেচনা) আবেদন করেন। ওই রিভিশন আবদনের উপর শুনানি শেষে বুধবার বিচারক আসামি দুইজনের জামিন বাতিলের আদেশ দেন।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, আসামি টি এস আইয়ুব ও তানিয়া রহমান ঢাকা ব্যাংকের ধানমন্ডি মডেল শাখায় একটি হিসাব খুলে তিন জন বিদেশি বায়ারের নামে ১৯টি এলসি দাখিল করেন। এরপর অপর আসামিদের যোগসাজসে ভুয়া বিল অব এক্সপোর্ট, বিল অব লেডিংসহ পণ্য শিপমেন্ট রেকর্ডপত্র তৈরি করে ৫৭ লাখ ৪৪ হাজার ২৫ ডলারের ২৬টি এক্সপোর্ট বিল ২০১৭ সালের ৫ জুলাই থেকে ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকটিতে দাখিল করেন। ব্যাংক কর্মকর্তারা সঠিকভাবে যাচাই না করেই ১৭টি বিল ক্রয়ের অনুমতি দিয়ে টি এস আইয়ুব ও তানিয়া রহমানের হিসাবে ২৬ কোটি ৮৫ লাখ ৯৮ হাজার ১২৬ টাকা ট্রান্সফার করেন। ওই ১৭টি বিলের মধ্যে চারটি বাবদ পাঁচ কোটি ৬১ লাখ ছয় হাজার ৭০৮ টাকা ৫০ পয়সা ব্যাংকে জমা হলেও ১৪টি বিলের ২১ কোটি ২৪ লাখ ৯১ হাজার ৪১৭ টাকা ৫০ পয়সা আসামিরা পরষ্পর যোগসাজসে আত্মসাৎ করেন।