সাতক্ষীরায় ইয়াসের প্রভাবে তলিয়ে গেছে সাড়ে সাত সহস্রাধিক ঘের
পূর্ণিমার ভরাকটালে ইয়াসের ভয়াল থাবা থেকে সাতক্ষীরা অঞ্চল বিপদমুক্ত হলেও জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে এখানকার জনপদ ও অবকাঠামো। ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর নিয়ে বিপাকে গ্রামবাসী। আজ বৃহস্পতিবার সরেজমিন ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে।
সাতক্ষীরা জেলার উপকূলের চারটি উপজেলায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ ভেঙে সাড়ে সাত সহস্রাধিক মাছের ঘের জোয়ারের পানিতে সয়লাব হয়ে গেছে। নোনা পানি ঢুকে গেছে গ্রামে।
কোথাও কোথাও বেড়িবাঁধ ও সড়ক উপচে গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে গেছে পানি। পানির তোড়ে জেলার কয়েকটি স্লুইসগেট এখন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। দেবহাটার টাউনশ্রীপুরে সীমান্ত নদী ইছামতি সংলগ্ন ও সুশীলগাঁতিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুটি স্লুইসগেটে ফাটল দেখা দিয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের হিসাব অনুযায়ী সাতক্ষীরাসহ খুলনা অঞ্চলে ১২০ কিলোমিটার বাঁধ ভেঙে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। অনেক স্থানে এসব বাঁধ স্থানীয়ভাবে মেরামতের কাজও চলছে।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল বলেন, এলাকাজুড়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি এখনও পুরোপুরি নিরূপণ করা যায়নি। বাঁধ ভেঙেছে, মাছের ক্ষতি হয়েছে।
জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, শ্যামনগর, আশাশুনি, কালিগঞ্জ ও দেবহাটা উপজেলার ২৭টি ইউনিয়নের সাত হাজার ৫৬০টি মাছের ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর আয়তন ছয় হাজার ৭৩৮ হেক্টর। এই খাতে মাছ এবং অবকাঠামোগত সব হিসাব মিলিয়ে ৫৫ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মশিউর রহমান।
পূর্ণিমার ভরাকটালের জোয়ারে সাতক্ষীরার শ্যামনগর, আশাশুনি ও দেবহাটা উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকার চিংড়ি ঘের এখন পানির নিচে।
আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল হোসেন খান বলেন, ‘এ এলাকায় এক হাজার ৪০০ হেক্টর জমির মাছের ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দেবহাটা উপজেলায় ২০০ ঘের পানিতে তলিয়ে আছে। অপরদিকে শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু জার গিফারী বলেন, ‘এক হাজার ৬০০ হেক্টরের দুই হাজার ৫০০ ঘেরের মাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
সাতক্ষীরা-৪ আসনের সাংসদ এস এম জগলুল হায়দার বলেন, ‘আম্পানের ক্ষতির রেশ কাটতে না কাটতেই নতুন করে আবার ভাঙল বাঁধ। সরকারের সহায়তায় জনপ্রতিনিধি ও গ্রামের মানুষ মিলে বাঁধ মেরামতের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।’