সাতক্ষীরায় বেড়িবাঁধ ধসে আরও ১১ গ্রাম প্লাবিত
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে খোলপেটুয়া নদীর প্রবল জোয়ারের পানিতে আবারও ভেঙে গেছে শ্যামনগরের বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের দুর্গাবাটী বেড়িবাঁধ। আজ শুক্রবার দুপুর নাগাদ ভাঙন রোধ করা গেলেও সন্ধ্যায় আবারও তা ধসে পড়ে।
জানা গেছে, বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের পূর্ব দুর্গাবাটী, পশ্চিম দুর্গাবাটী, পোড়াকাটলা, দাঁতিনাখালী, কলবাড়ি, ভামিয়া, মাদিয়া, বুড়িগোয়ালিনীসহ ১১টি গ্রাম নতুন করে প্লাবিত হয়েছে।
বুড়িগোয়ালিনী ইউপি চেয়ারম্যান ভবতোষ মণ্ডল জানান, গ্রামের বাড়ি বাড়ি পানি উঠে গেছে। এখানকার স্কুল, বাজার ও বিভিন্ন স্থাপনা নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। তিনি বলেন, স্থানীয়ভাবে জনগণ নিয়ে বাঁধ রক্ষার চেষ্টা করেও আমরা ব্যর্থ হয়েছি।
এদিকে আজ সকালে শ্যামনগরের পদ্মপুকুর ইউনিয়নের পাতাখালি গ্রামে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবিতে কাফনের কাপড় পরে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে স্থানীয় জনগণ। সকাল ১০টায় উপজেলার পাতাখালি পয়েন্টে ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধের ওপর এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়।
এ সময় ‘আমরা ভাসতে চাই না, বাঁচতে চাই, একবারই মরব, বারবার নয়’ ইত্যাদি লেখা সংবলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে উপকূলের বাসিন্দারা প্রতিবাদ জানায়।
প্রতীকী লাশ হয়ে প্রতিবাদ জানান উপকূলের বাসিন্দা মাসুম বিল্লাহ, ইয়াসির আরাফাত, সালাউদ্দিন, মাহি ও সালাউদ্দিন জাফরী।
উপকূলের শিক্ষার্থীদের সংগঠন ম্যানগ্রোভ স্টুডেন্ট সোসাইটি আয়োজিত এই কর্মসূচিতে সংগঠনের সভাপতি আরিফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক শাহিন বিল্লাহ, তরিকুল ইসলাম, মুহতারাম বিল্লাহ, মুতাসিম বিল্লাহ, হাসানুল বান্না প্রমুখ বক্তব্য দেন।
বক্তারা বলেন, ১২ বছর ধরে উপকূলের মানুষ ভাসছে। প্রতিবারই এমন পরিস্থিতিতে কর্তাব্যক্তিরা শুধু আশ্বাসের বুলি আওড়ান। নানান ধরনের মেগা প্রকল্পের গল্প শোনান। কিন্তু দুঃখের বিষয়, এখনো কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। উপকূলের মানুষকে বাঁচাতে টেকসই বেড়িবাঁধের বিকল্প নেই।
বক্তারা আরও বলেন, টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করতে ব্যর্থ হলে সাতক্ষীরা উপকূলীয় অঞ্চলকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে স্থানীয়দের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিন। আমরা বারবার নয়, একবারই মরতে চাই।