সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ
প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ ২০ মার্চ। ২০১৩ সালের এই দিনে তিনি রাষ্ট্রপতি থাকাকালে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। ২০০৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি তিনি রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পেয়েছিলেন। দায়িত্ব পালনকালে তিনি কয়েকবার অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হন। পরে মৃত্যুর তিন দিন আগে তাঁকে সিঙ্গাপুরে নিলে ২০ মার্চ বিকেলে তাঁর মৃত্যু হয়।
প্রয়াত এই রাষ্ট্রপতির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলায় তাঁর নিজ বাড়ি আইভি ভবনসহ ভৈরব উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগ দোয়া, মিলাদ মাহফিল ও কোরআন খতমের আয়োজন করেছে। এ ছাড়া ভৈরব প্রেসক্লাব, টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, মুক্তিযোদ্ধা যুব কমান্ড দোয়া ও মিলাদের আয়োজন করেছে। এদিন বাদ জুমা মসজিদে মসজিদে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম সেন্টু এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
১৯২৯ সালের ৯ মার্চ ভৈরব শহরের ভৈরবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন জিল্লুর রহমান। তাঁর বাবা প্রয়াত মেহের আলী মিয়া ছিলেন প্রখ্যাত আইনজীবী, তৎকালীন ময়মনসিংহের লোকাল বোর্ড চেয়ারম্যান এবং জেলা বোর্ডের সদস্য।
জিল্লুর রহমান ময়মনসিংহ জেলা শহরে শিক্ষাজীবন শুরু করেন। ১৯৪৫ সালে তিনি ভৈরব কেবি হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন। তারপর ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজ থেকে আইএ এবং ১৯৫৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে অনার্সসহ এমএ ও এলএলবি ডিগ্রি লাভ করেন।
১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে অংশ নেন জিল্লুর রহমান। ১৯৫৬ সালে তিনি কিশোরগঞ্জ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৫২ সাল থেকে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে আওয়ামী মুসলিম লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। তিনি বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে প্রতিটি আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭০ সালে তিনি পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের সদস্য (এমএনএ) নির্বাচিত হন। জিল্লুর রহমান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ছিলেন।
১৯৫৮ সালের ২৭ জুন ভৈরবের আইভি রহমানের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন জিল্লুর রহমান। তাঁদের দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন তাঁর একমাত্র ছেলে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে পাঁচবার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন জিল্লুর রহমান। এ ছাড়া কিশোরগঞ্জ-৬ (ভৈরব-কুলিয়ারচর) আসন থেকে ছয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে ঘাতকরা হত্যা করলে জিল্লুর রহমানকে সামরিক শাসকরা গ্রেপ্তার করে। এরপর তাঁকে একটি মিথ্যা মামলায় পাঁচ বছর সাজা দেওয়া হয়।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী হন জিল্লুর রহমান। তখন তিনি দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সংসদেরও উপনেতা ছিলেন।