সালমান শাহ হত্যার ২৫ বছর : যে কারণে বিচারে বিলম্ব
ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহ হত্যা মামলা ২৫ বছরেও তদন্তের গণ্ডি পার হতে পারেনি। আর এ কারণে বিলম্বিত হচ্ছে বিচারকাজ।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার ইমন ওরফে সালমান শাহ নিহত হন। সে সময় তাঁর বাবা (প্রয়াত) কমরউদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছিলেন। সালমানের বাবা তাঁর ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে—এমন অভিযোগ এনে ১৯৯৭ সালের ২৪ জুলাই সিএমএম আদালতে অভিযোগ করেন। এরপর সালমানের মৃত্যুর ঘটনায় একাধিক তদন্ত সংস্থা তাদের চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করে। সর্বশেষ গত বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর এ মামলার বাদী প্রয়াত সালমান শাহের মা নীলা বেগম নারাজি দাখিল করবেন বলে সময়ের আবেদন করেছেন।
এ বিষয়ে সালমান শাহ হত্যা মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহম্মেদ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘এ মামলায় নারাজির দরখাস্ত দায়ের করা হবে। কিন্তু, সালমান শাহের মা নীলা বেগম লন্ডনে থাকার কারণে আদালতে সময়ের আবেদন দাখিল করা হচ্ছে। আগামী ৩১ অক্টোবর এ মামলার বাদী নীলা বেগম নারাজির আবেদন করবেন। ওই দিন এ মামলার শুনানি রয়েছে।’
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ঢাকার সিএমএম আদালত সালমান শাহের অপমৃত্যুর মামলার সঙ্গে হত্যার অভিযোগটি একসঙ্গে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) নির্দেশ দেন।
পরবর্তী সময়ে একই বছরের ৩ নভেম্বর সিআইডি ঘটনাটি পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে ঢাকার সিএমএম আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে।
ওই চূড়ান্ত প্রতিবেদনে সালমান শাহর মৃত্যুকে অপমৃত্যু হিসেবে উল্লেখ করে সিআইডি। একই বছরের ২৫ নভেম্বর ঢাকার সিএমএম আদালত সিআইডির দাখিল করা চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করেন। সিআইডির দাখিল করা প্রতিবেদনে সালমানের বাবা সন্তুষ্ট না হয়ে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে একটি রিভিশন মামলা করেন।
ওই রিভিশন মামলার ওপর শুনানি শেষে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ২০০৩ সালের ১৯ মে মামলাটি ফের বিচার বিভাগীয় তদন্তের জন্য নির্দেশ দেন। এরপর ১২ বছর ধরে এ মামলা বিচার বিভাগীয় তদন্তে ছিল।
২০১৪ সালের ৩ আগস্ট সিএমএম হাকিম বিকাশ কুমার সাহার কাছে মহানগর হাকিম ইমদাদুল হক বিচার বিভাগীয় তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দাখিল করেন। ওই প্রতিবেদনেও সালমান শাহর মৃত্যুকে অপমৃত্যু হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
পরবর্তী সময়ে সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরী ওই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সিএমএম আদালতে আরেকটি নারাজি দাখিল করেন। এর শুনানি শেষে বিচারক মামলাটি র্যাবকে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সে আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে রিভিশন মামলা করেন। পরে ঢাকার বিশেষ জজ ৬-এর বিচারক ইমরুল কায়েস রিভিশন মঞ্জুর করেন। এরপর ২০১৬ সালের শেষ দিকে পিবিআইকে নতুন করে তদন্তভার দেওয়া হয়।