সিসিক মেয়রের ওপর পরিবহণ শ্রমিকদের হামলা
সিলেট নগরীর চৌহাট্টা এলাকায় মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকারের অবৈধ স্ট্যান্ড উচ্ছেদে গিয়ে হামলার মুখে পড়েছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) মেয়র ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এতে কাউন্সিলর-পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। আজ বুধবার দুপুর ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে, ঘটনাস্থল থেকে আগ্নেয়াস্ত্রসহ ফয়সল আহমদ ফাহাদ (৩৮) নামে এক পরিবহন শ্রমিককে আটক করেছে পুলিশ।
সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ শাখা জানায়, আজ সকালে চৌহাট্টা এলাকায় সড়কের উন্নয়ন কাজ বন্ধ করে দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে পরিবহন শ্রমিকরা। এ খবর পেয়ে দুপুরে কাউন্সিলর, ম্যাজিস্ট্রেট ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে উন্নয়ন কাজ পরিদর্শনে যান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। এ সময় তিনি দেখতে পান পরিবহন শ্রমিকরা তখনও সড়ক ও ফুটপাত দখল করে গাড়ি পার্কিং করে রেখেছে। এ সময় মেয়রসহ সিসিকের কর্মকর্তারা সড়ক সম্প্রসারণের কাজ শুরু করতে চাইলে তারা বাধা দেন। এ নিয়ে আলাপচারিতার এক পর্যায়ে সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তাদের ওপর হামলা চালায় পরিবহন শ্রমিকরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, পরিবহন শ্রমিকদের হামলার পর পর সিটি করপোরেশনের কর্মীরাও পাল্টা হামলা চালায়। এক পর্যায়ে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে পুলিশের ওপরও হামলা চালায় শ্রমিকরা। এ সময় অর্ধশতাধিক গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এছাড়া চৌহাট্টা-আম্বরখানা, চৌহাট্টা-রিকাবীবাজার, চৌহাট্টা-জিন্দাবাজার, চৌহাট্টা-মিরবক্সটুলা সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে।
সিলেট সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা আব্দুল আলিম শাহ বলেন, ‘মেয়র, কাউন্সিলর ও ম্যাজিস্ট্রেটদের সঙ্গে আলাপচারিতার এক পর্যায়ে পরিবহন শ্রমিকরা আচমকা হামলা চালায়। এ সময় কাউন্সিলরসহ সিসিকের অন্তত আটজন আহত হয়েছেন। হামলার একপর্যায়ে বন্দুক নিয়ে একজন মেয়রের দিকে তেড়ে আসেন। পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে আটক করে। আমাদের আশঙ্কা মেয়রকে হত্যার উদ্দেশ্যই তিনি আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে এসেছিলেন।’
সিলেট কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আবু ফরহাদ বলেন, ‘পুলিশ আধঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় ১৬ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোঁড়া হয়। ঘটনাস্থল থেকে আগ্নেয়াস্ত্রসহ ফয়সল আহমদ ফাহাদ নামের এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে।’
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পরিবহণ শ্রমিকদের একজন বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরেই এই এলাকায় স্ট্যান্ড করে আছি। উচ্ছেদের আগে আমাদের বিকল্প একটি জায়গা দেওয়ার জন্য মেয়রের কাছে অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তি তিনি তা না শুনে আজ দলবল নিয়ে এসে আমাদের ওপর হামলা করেন ও গাড়ি ভাঙচুর করেন। সংঘর্ষে পরিবহন শ্রমিদকের পাঁচ থেকে ছয়জন আহত হয়েছে।’
সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (ট্রাফিক) ফয়সল মাহমুদ বলেন, ‘সরকারি রাস্তা দখল করে যানবাহন রাখা হচ্ছে দীর্ঘদিন থেকে। কিন্তু সম্প্রতি সিসিকের উন্নয়ন কাজ শুরু হওয়ায় চৌহাট্টা এলাকার অবৈধ পরিবহন স্ট্যান্ড সরানোর জন্য বলা হলেও শ্রমিকরা যানবাহন না সরিয়ে বিভিন্ন দাবি জানিয়ে আন্দোলন শুরু করে। এক পর্যায়ে সিসিকের কর্মী ও পরিবহন শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।’