স্বার্থের দ্বন্দ্বে কবরস্থানে ঝুলল তালা!
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার মশাউড়া গোবরগাড়া গ্রামে অবস্থিত একটি কবরস্থানে শুক্রবার রাতে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে স্থানীয় একটি মহল। দুই দিন ধরে ওই কবরস্থানে তালা ঝুলছে। বার্তা সংস্থা ইউএনবির এক প্রতিবেদনে এ খবর জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানায়, কবরস্থান কমিটির সভাপতি স্থানীয় এমজি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওহিদুল হকের বাবা আজাহার আলী ৪১ বছর আগে নিজের দুই বিঘা জমি দান করেন কবরস্থানের জন্য। তিনি মারা যাওয়ার পর ২০০৮ সালে তাঁর ছেলে ওহিদুল হক সভাপতির দায়িত্ব নেন। এরপর ওই কবরস্থানের নানা উন্নয়ন কাজ করেন তিনি।
কিন্তু গত ২৫ মে ঈদের নামাজ শেষে এলাকার হামিদুল ইসলাম, মাহমুদ মাস্টার ও নাসির উদ্দিন কবরস্থান উন্নয়নে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করার কথা বলে এলাকাবাসীর কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেন। কিন্তু পরে উন্নয়নের আবেদনের পরিবর্তে সভাপতি ওহিদুল হকের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে তাঁর অপসারণ দাবি করে ওই গণস্বাক্ষর সংযুক্ত কাগজ রোববার জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়।
এ বিষয়ে হামিদুল ইসলাম ও নাসির উদ্দিন পাল্টা অভিযোগ করেন, এক থেকে দেড়শ গ্রামবাসী একত্রিত হয়ে বৈঠক করে সভাপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। সবার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কবরস্থানে তালা লাগানো হয়েছে।
অন্যদিকে, বর্তমান সভাপতি ওহিদুল হক জানান, কবরস্থানের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এখনো ১০ লাখ টাকার বেশি জমা আছে। এ টাকা নামেমাত্র কাজ দেখিয়ে আত্মসাতের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে কুচক্রী একটি মহল। এ ছাড়া কবরস্থান কমিটির অর্থ সম্পাদক বাদল বিশ্বাসের কাছে ফান্ডের নগদ সাড়ে তিন লাখ টাকা রয়েছে। ওই টাকা দিয়ে তিনি তামাকের ব্যবসা করেছেন।
বিষয়টি অস্বীকার করে বাদল বিশ্বাস বলেন, ‘আমার কাছে ব্যবসা করার মতো টাকা নেই।’ তিনি জানান, অর্থ কমিটির মাধ্যমে টাকা ব্যয় না হওয়ার কারণে কবরস্থানের কমিটি নিয়ে এ ধরনের ঝামেলা তৈরি হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শারমিন আক্তার বলেন, ‘একটি কবরস্থান নিয়ে জটিলতার কথা শুনেছি। তবে এখন পর্যন্ত এ সম্পর্কিত কোনো অভিযোগ জমা পড়েনি। অভিযোগ হাতে পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’