সড়ক দুর্ঘটনায় যে যানবাহনে নিহত বেশি
বিদায়ী বছরের ডিসেম্বরে দেশে ৩৮৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪১৮ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ৪৯৭ জন। তাদের মধ্যে ৬৩ জন নারী ও ৪৯ জন শিশু রয়েছে। এসব দুর্ঘটনার মধ্যে মোটরসাইকেলে সবচেয়ে বেশি ঘটেছে। বিভাগ অনুযায়ী সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিভাগে।
আজ শনিবার রোড সেফটি ফাউন্ডেশন ডিসেম্বর মাসের সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান স্বাক্ষরিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংগঠনটি সাতটি জাতীয় দৈনিক, পাঁচটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, মোট দুর্ঘটনার মধ্যে ১৬৭টি মোটরসাইকেলের, যা মোট দুর্ঘটনার ৪৪ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৭৮ জন নিহত হয়েছেন, যা মোট মৃত্যুর ৪৩ শতাংশ।
প্রতিবেদন অনুযায়ী যানবাহনভিত্তিক নিহতের চিত্র
দুর্ঘটনায় যানবাহনভিত্তিক নিহতের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী ১৭৮ জন (৪২.৫৮%), বাসযাত্রী ১১ জন (২.৬৩%), ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান-ট্রাক্টর-ট্রলি-লরি যাত্রী ১৮ জন (৪.৩০%), মাইক্রোবাস-প্রাইভেটকার-অ্যাম্বুলেন্স যাত্রী ১২ জন (২.৮৭%), থ্রি-হুইলার যাত্রী (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-হিউম্যান হলার) ৪৫ জন (১০.৭৬%), স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী (নসিমন-ভটভটি-আলমসাধু-মাহিন্দ্র-লাটাহাম্বা-টমটম) ১৬ জন (৩.৮২%) এবং প্যাডেল রিকশা-রিকশাভ্যান-বাইসাইকেল আরোহী ১১ জন (২.৬৩%) নিহত হয়েছে।
দুর্ঘটনা সংঘটিত সড়কের ধরন
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১৪৯টি (৩৮.৯০%) জাতীয় মহাসড়কে, ১২৪টি (৩২.৩৭%) আঞ্চলিক সড়কে, ৬৭টি (১৭.৪৯%) গ্রামীণ সড়কে, ৩৯টি (১০.১৮%) শহরের সড়কে এবং অন্যান্য স্থানে ৪টি (১.০৪%) সংঘটিত হয়েছে।
ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। এ বিভাগে ১০২টি দুর্ঘটনায় ১১৩ জন নিহত হয়েছেন। আর রাজধানী শহরে ১৫টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৮ জন। সবচেয়ে কম সিলেট বিভাগে। এ বিভাগে ১৬টি দুর্ঘটনায় ১৯ জন নিহত হয়েছেন।
এসব দুর্ঘটনার জন্য ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, বেপরোয়া গতি, চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা, বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল, তরুণ ও যুবকদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো, জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, বিআরটিএর সক্ষমতার ঘাটতি এবং ১০ গণপরিবহণ খাতে চাঁদাবাজিকে দায়ী করা হয়েছে প্রতিবেদনে। সড়ক দুর্ঘটনা এড়াতে এসব সমস্যা সমাধানের সুপারিশ করা হয়েছে।