হাইকোর্টে জামিন পেলেন মিনু, বুলবুল ও মিলন
রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, রাজশাহী মহানগর সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ও সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলনকে আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ২৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তাঁদের বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে।
আজ বুধবার বিচারপতি হাবিবুল গণি ও বিচারপতি রিয়াজ উদ্দীনের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে বিএনপির নেতাদের পক্ষে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্ট বারের সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ও ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন।
এ বিষয়ে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘রাজনৈতিক বক্তব্যকে আমলে নিয়ে রাষ্ট্রদ্রোহিতা মামলা করা যায় না। এ ছাড়া পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) বাদী হয়ে এ মামলা করেছিলেন, যা চলতে পারে না। আদালত এসব বিষয় আমলে নিয়ে তিন নেতাকে জামিন দিয়েছেন।’
এর আগে গত ১৬ মার্চ রাজশাহীর চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মহানগর আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোসাব্বিরুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছিলেন।
মামলার আরজিতে বলা হয়েছে, গত ২ মার্চ বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাসহ নির্বাচিত সরকার উৎখাতের প্রকাশ্য ঘোষণা ও হুমকি প্রদর্শন করে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধ করেছেন আসামিরা। এ অভিযোগে অপরাধ হিসেবে ১২৩ (ক), ১২৪ (ক) ও (৩৪) দণ্ডবিধি উল্লেখ করা হয়েছে।
আরও বলা হয়েছে, গত ২ মার্চ রাজশাহী মহানগর বিএনপির সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলনের সঞ্চালনায় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বিএনপির এ চার নেতা পূর্বপরিকল্পিতভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার উৎখাতের অসৎ উদ্দেশ্যে নেতাকর্মী, সাংবাদিক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে মিজানুর রহমান মিনু প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘হাসিনা রেডি হও, আজ সন্ধ্যার সময়, কালকে সকাল তোমার নাও হতে পারে, মনে নাই পঁচাত্তর সাল? পঁচাত্তর সাল মনে নাই?’
মিজানুর রহমান মিনুর এ ঘোষণার পর দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে উগ্রভাব ছড়িয়ে পড়ে। কিছু নেতাকর্মী সমাবেশের এ বক্তব্য ফেসবুকে লাইভ সম্প্রচার করেন।
সমাবেশে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা রুহুল কুদুস তালুকদার দুলুসহ অন্যরাও একইভাবে বক্তব্য দিয়ে ঘৃণা-বিদ্বেষ সৃষ্টি করেন এবং বেআইনিভাবে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন নির্বাচিত সরকার উৎখাতের হুমকি দেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাসহ নির্বাচিত সরকার উৎখাতের প্রকাশ্য ঘোষণা ও হুমকি দিয়ে তারা রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধ করেছেন। যা বাংলাদেশের নিরাপত্তা এবং সার্বভৌমত্বের প্রতি বিপজ্জনক ও হুমকিস্বরূপ বলেও এ আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।