হাওরের ৪৪ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে : কৃষিমন্ত্রী
কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের নানান উদ্যোগের ফলে হাওরের কৃষকরা ভালোভাবে ধান কাটতে পারছে। এরইমধ্যে তারা ৪৪ ভাগ ধান কেটে ঘরে তুলতে পেরেছে। কৃষিমন্ত্রী আজ শনিবার তার সরকারি বাসভবন থেকে এক ভিডিও বার্তায় এ কথা বলেন।
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘পরিবহন নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও ধান কাটার জন্য বিভিন্ন জেলা থেকে শ্রমিকদের আনার ব্যবস্থা আমরা করেছি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিভিন্ন জেলা থেকে শ্রমিকরা এসেছে। শ্রমিকের পাশাপাশি হাওড় এলাকায় ধান কাটার জন্য কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার ও রিপার ব্যবহৃত হচ্ছে। এসব যন্ত্রপাতি দিয়ে পুরোদমে ধান কাটা চলছে।’
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘ব্রি-২৮ জাতের ধান আগে পাকে, এটি কাটা প্রায় শেষ হয়েছে। ব্রি-২৯ জাতের ধান এখনো পাকে নাই, আরো সাত-আট দিন সময় লাগবে। অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাত বা আগাম বন্যা না হলে যে গতিতে ধান কাটা চলছে, আমরা আশাবাদী হাওরের কৃষকেরা আগামী ১০ দিনের মধ্যে সময়মতো ধান ঘরে তুলতে পারবে।’
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যানুসারে, হাওরাঞ্চলের কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া- এই সাতটি জেলায় এ বছর শুধু হাওরে চার লাখ ৪৫ হাজার ৩৯৯ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে (২৪ এপ্রিল) পর্যন্ত কর্তন হয়েছে ১.৯৮ লাখ হেক্টর জমির ধান যা শতকরা ৪৪ ভাগ।
সিলেটে ৫৩ ভাগ, মৌলভীবাজারে ৫৪ ভাগ, হবিগঞ্জে ৩৭ ভাগ, সুনামগঞ্জে ৪৮ ভাগ, নেত্রকোনায় ৫৬ ভাগ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৫৬ ভাগ ধান কাটা হয়েছে। হাওড় এলাকায় তিন লাখ নয় হাজার ২৪৪ জন শ্রমিক, ৩৫৯টি কম্বাইন হার্ভেস্টার ও ৪৪২টি রিপার ধান কাটার কাজে নিয়োজিত আছে।
কৃষিমন্ত্রী আরো বলেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে বিশ্বব্যাপী খাদ্য উৎপাদন ব্যাহত ও সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার বিষয়ে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) এরমধ্যেই সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছে। করোনার কারণে খাদ্য সংকটে পড়তে পারে পুরো বিশ্ব। দেখা দিতে পারে দুর্ভিক্ষও। এর প্রভাব বাংলাদেশেও পড়তে পারে।
আব্দুর রাজ্জাক আরো বলেন, কৃষি মন্ত্রণালয় সেই লক্ষে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আশা করি, কৃষি উৎপাদন ও বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখতে পারব। বাংলাদেশে খাদ্যের সংকট হবে না, তার জন্য যা যা করা দরকার, আমরা সেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। আমরা কৃষকের পাশে দাঁড়িয়েছি। আমরা তাদের অর্থনৈতিক সহযোগিতা দেব, সার, বীজ, বালাইনাশক, সেচসহ সব উপকরণের নিশ্চয়তা দেব।