‘হাত ধুতে বলছে সরকার, ওয়াসা দিচ্ছে না প্রয়োজনীয় পানি’
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত পুরো বিশ্ব। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানসহ (আইইডিসিআর) সরকারের সব বিভাগ থেকে বারবার বলা হচ্ছে, করোনা থেকে রক্ষা পাওয়ার একমাত্র পথ, শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে ঘরে থাকা; ঘরে থেকে নিয়মিত হাত-মুখ ধোয়া। কিন্তু, ঢাকা দক্ষিণ সিটির ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের সূত্রাপুর থানার শ্যামবাজারের বাগানবাড়ী পানির পাম্প-সংলগ্ন এলাকায় অন্তত ৫০টি বাড়ির মানুষ ভুগছেন পানির কষ্টে। নিয়মিত পানি পাচ্ছেন না তাঁরা। ফলে গোসল, হাত-মুখ ধোয়া থেকে শুরু করে গৃহস্থালির সব কাজেই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে স্থানীয়দের। ওই এলাকার পাঁচবাড়ি নামের পাড়াসহ অন্তত অর্ধশত ঘরের মানুষ এ ভোগান্তি থেকে রেহাই পেতে চায়। পেতে চায় নিয়মিত পানির সুবিধা।
সেখানকার এক স্থানীয় বাসিন্দা নীলা মজুমদার বলছিলেন, ‘আমাদের এখানে ওয়াসার দুটি পানির পাম্প আছে। কিন্তু ২২ দিন ধরে একটি পানির পাম্প নষ্ট। একটি পাম্প থেকে পানি দেয় কিন্তু তাতে সবার প্রয়োজন মেটে না। একেক ঘরের পানির লাইন ভিন্ন। এ ছাড়া ওয়াসার একটি পানির গাড়ি আসে। লাইনে দাঁড়িয়ে পানি নিতে হয়। সে পানি রাস্তা থেকে টেনে বাড়ি পর্যন্ত নিতে হয়। এ ছাড়া লাইনে দাঁড়ানোর সময় শারীরিক দূরত্ব মেনে চলা সম্ভব হয় না। এতে আমিও করোনায় আক্রান্ত হতে পারি। সে ভয় কিন্তু আছেই।’
আরেক স্থানীয় বাসিন্দা স্বাগত মজুমদার আরো বলেন, ‘চিকিৎসক, আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্য বা সরকারের পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে, করোনা থেকে বাঁচতে নিয়মিত সাবান-পানি দিয়ে হাত ধুতে। ঘর পরিষ্কার রাখতে। কিন্তু আপনি পানি দেবেন না নিয়মিত, তাহলে কীভাবে হবে? হাত কিংবা ঘর ধোয়ার জন্য তো নিয়মিত পানির দরকার।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে প্রকৌশল বিভাগের পরিচালক শহিদুল ইসলাম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘শুনেছি সমস্যা হয়েছে একটি পাম্পে। কিন্তু সেখানে কাজ চলছে। দ্রুতই সমাধান করার জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছি।’
এক নম্বর জোনাল অফিসার ও নির্বাহী প্রকৌশলী আল আমিন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘এখানে দুটি পানির পাম্প আছে। কিন্তু একটি পাম্পের যে স্থানে পানি থাকে, ওই স্থানটি ব্লক হয়ে গেছে। এটা একটি টেকনিক্যাল সমস্যা। তবে আমরা সেখানে কাজ করছি। খুব বেশি হলে আগামী এক সপ্তাহের ভেতর ঠিক হয়ে যাবে।’
আল আমিন আরো বলেন, ‘করোনার কারণে অনেকেই ঢাকায় নেই। সেজন্য প্রথম দিকে কাজের মানুষ পেতে একটু সমস্যা হয়েছিল। মূলত আমরা ঠিকাদারের মাধ্যমে কাজ করাচ্ছি। কিন্তু আমাদের একটি অভিযোগ সেন্টার আছে, সেখানে কিন্তু স্থানীয়রা অভিযোগ করেন না। একটি পাম্প থেকে পানি পাচ্ছেন তাঁরা। এ ছাড়া আমরা ওয়াসার গাড়িতে করে পানিও দিচ্ছি।’
এদিকে আজ মঙ্গলবার সকালে ওয়াসার গাড়ি থেকে পানি আনতে গিয়ে এলাকাবাসীকে শুনতে হয় আরেক দুঃসংবাদ। পানি সরবরাহকারীরা জানান, আগামীকাল থেকে আর পানি সরবরাহ করা সম্ভব হবে না। কারণ হিসেবে বলা হয়, যে স্থান থেকে পানি সংগ্রহ করা হয়, সে এলাকায় করোনায় আক্রান্ত একজন রোগী পাওয়া যাওয়ায়, সে এলাকা লকডাউন করে দেওয়া হয়েছে। এখন দেখার বিষয় কত দ্রুত পাম্পটি ঠিক হয়। তা না হলে ভোগান্তি আরো বাড়বে বলে আশঙ্কা এলাকাবাসীর।