হেলিকপ্টারে এসে কনে নিয়ে গেলেন বর, মানুষের ঢল
হেলিকপ্টারে এসে নববধূ নাফিসা বিনতে নওয়াজ নেহাকে নিয়ে গেলেন বর নওরোজ ফারহান নূর। গতকাল শুক্রবার বিকেলে জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলা সদরে এই বিয়ের আয়োজন করা হয়েছিল।
স্বল্প সময়ের জন্য বিদায় অনুষ্ঠানে ঢাকার মহাখালী এলাকার আকিজ পার্টিকেলের ইডি হেলাল আহমেদের ছেলে বর নওরোজ ফারহান নূর হেলিকপ্টারে করে কনেকে নিয়ে যান।
বর ও বরের মা-বাবাসহ হেলিকপ্টারটি দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে দেবীগঞ্জ পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে (দেবীগঞ্জ থানার সামনে) নামে। তবে অন্য বরযাত্রীরা সড়ক পথে কনের বাসায় আসে। হেলিকপ্টার থেকে নেমে বর ঘোড়ার গাড়িতে করে কনের বাড়িতে যান।
হেলিকপ্টারে বর আসার খবর গোটা এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে তা দেখতে বিভিন্ন বয়সী শত শত মানুষ ভিড় করে। বিকেল ৪টার দিকে বর-কনের বিদায় নেওয়া পর্যন্ত এসব উৎসুক মানুষ ভিড় করে মাঠে। উৎসুক জনতার ভিড় সামলাতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। বিদায় বেলায় কান্নার রোল না থাকলেও বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মোবাইল ফোনে ছবি ভিডিও ও সেলফি তোলার হিড়িক পড়ে। আর এই ভিড় সামলাতে দেবীগঞ্জ থানা পুলিশকে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয়।
জানা গেছে, বর নওরোজ ফারহান নূর ঢাকার মহাখালী এলাকার আকিজ পার্টিকেলের নির্বাহী পরিচালক হেলাল আহমেদের ছেলে। তিনি জাপান টোবাকো কোম্পানিতে চাকরি করেন। আর কনে নাফিসা বিনতে নওয়াজ নেহা জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার দেবীগঞ্জ বাজারপাড়া এলাকার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি নুর নেওয়াজের মেয়ে।
কনের বাবা নুর নেওয়াজ জানান, কিছুদিন আগে নওরোজের সঙ্গে পারিবারিকভাবে নাফিসার বিয়ে হয়। কনের বিদায়ের দিন ঠিক করা হয় গতকাল। জেলার দেবীগঞ্জে হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ের অনুষ্ঠান এটাই প্রথম। প্রায় চার ঘণ্টা কনের বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজসহ নানা আনুষ্ঠানিকতা চলে।
দেবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গিয়াসউদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক হাসনাত জামান চৌধুরী জজ, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক চিশতি, দেবীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আবু বক্কর সিদ্দিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ বিয়ের দাওয়াতে অংশ নেয়। গণমাধ্যম, টিভি ও সিনেমায় হেলিকপ্টারে করে বিয়ে করতে আসা বা কনেকে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি জানলেও এখানকার মানুষ এবার তা স্বচক্ষে দেখে অভিভূত।
কনের চাচা নুরে আরিফ বলেন, বিয়েতে বরপক্ষের প্রায় ৪০ জন লোক এসেছেন। এ ছাড়া স্থানীয়সহ আত্মীয়স্বজন, জনপ্রতিনিধি, উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশকে বিয়েতে দাওয়াত করা হয়। বিয়ে শেষে বিকেল ৪টার দিকে বর-কনে হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় ফিরে যান।
দেবীগঞ্জের নয়ন হোসেন জানান, হেলিকপ্টারে করে বর এসে কনেকে নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখতে হাজারো মানুষ মাঠে ভিড় করে। সাইকেল, ভ্যান-রিকশা, কার, মাইক্রোবাসসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে এসে লোকজন হেলিকপ্টারকে ঘিরে রাখে। লোকজন সামলাতে পুলিশকে হিমশিম খেতে হয়।
দেবীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আবু বক্কর সিদ্দিক আবু বলেন, বর হেলিকপ্টারযোগে কনেকে নিতে আসার খবরটি ছড়িয়ে পড়ায় হাজার হাজার মানুষ ভিড় করে। গোটা পৌরবাসী একটি সুন্দর মুহূর্ত উপভোগ করেছে। নতুন এই দম্পতির জন্য সবার কাছে দোয়া কামনা করছি।
দেবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জামাল হোসেন বলেন, হেলিকপ্টারে বিয়ের বিষয়টি অবহিত করে থানা পুলিশকে দাওয়াত করেছে কনে পক্ষ। হেলিকপ্টার ও বর-কনেকে একঝলক দেখার জন্য প্রচুর মানুষ ভিড় করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমাদের হিমশিম খেতে হয়েছে।